খবরের শিরোনামঃ বিটিআরসির অনুমোদন ছাড়া বিটিসিএলের ট্যারিফ

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১০-১৯

-স্টাফ রিপোর্টার :
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) অনুমোদন ছাড়াই নতুন ট্যারিফ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল)। শুধু ঘোষণাই নয়, গত ২১ সেপ্টেম্বর সেটি বিটিসিএলের ওয়েব সাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও বিটিআরসি’র সার্ভিস ও ট্যারিফ নীতিমাল অনুযায়ী যে কোন ধরনের ট্যারিফ ঘোষণা ও পরিবর্তনের আগে কমিশনের অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু বিটিসিএল সেই নীতিমালার অনুসরণ কিংবা অনুমোদনের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, ভোক্তা পর্যায়ে সুলভ মূল্যে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে কস্ট কম্পোনেন্ট মূল্য (সংশ্লিষ্ট সকল ব্যয়) কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। কস্ট বেইজ-এর সমন্বিত নির্ধারণ করতে এবং সুলভ মূল্যে দেশের সর্বত্র ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে গঠন করা হয়েছে একটি কমিটি। ওই কমিটিকে এ বিষয়ে সার্বিক বিষয় তথ্য সংগ্রহ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এর আগে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) অপারেটরদের কস্ট বেইজ ট্যারিফ নির্ধারণের জন্য এবং ব্যাক হল প্রাইস ও ক্যাবল লে করার জন্য গত ৩০ এপ্রিল সভা আহ্বান করে বিটিআরসি। ওই সভায় এনটিটিএন সম্প্রসারণ ও ইন্টারনেট সেবার মূল্য গ্রাহক পর্যায়ে কমানোর জন্য আলোচনা করা হয়। সভায় সামিট, ফাইবার এট হোম, বিটিসিএল ও পিজিসিবির প্রতিনিধি উপস্থিত ছিল। এনটিটিএন লাইসেন্সধারীরা প্রতিযোগিতামূলক বাজারের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য ট্যারিফের সর্বোচ্চ স্তর ও সর্বনিম্ন স্তর নির্ধারণ করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। পরবর্তীতে ১১ জুন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সভায় কস্ট বেইজ সমন্বিত ট্যারিফ নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করে। বিষয়টি নিয়ে আগামীকালও একটি সভা আহ্বান করেছে বিটিআরসি। তবে যখন কস্ট বেইজ নির্ধারণ নিয়ে বিটিআরসি এনটিটিএন অপারেটরদের নিয়ে কাজ করছে ঠিক সে সময় নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিটিআরসি অনুমোদন না নিয়ে নতুন ট্যারিফ ঘোষণা করেছে বিটিসিএল। যদিও বিটিআরসি’র ডিরেক্টিভস এন্ড ট্যারিফ গাইডলাইন-২০১৫ অনুযায়ী সব ধরনের ট্যারিফ স্ট্রাকচার, সব ধরনের সেবা, প্রচারমূলক কার্যকলাপ, নেটওয়ার্ক টাইপ, চার্জের প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে বিটিআরসি’র কস্ট মডেল মেনে চলতে হবে এবং বিটিআরসিকে জানাতে হবে। যে কোন ধরনের ট্যারিফ সার্ভিস এবং ট্যারিফ স্ট্রাকচার অবশ্যই কমিশন অনুমোদিত হতে হবে। ট্রান্সমিশন সার্ভিসের কস্ট বেইজ ট্যারিফ নির্ধারণ নিয়ে যে সময় কাজ হচ্ছে সে সময় বিটিসিএলের এধরনের ট্যারিফের ঘোষণা বর্তমান টেলিকম ব্যবসায় বিরূপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে এই ট্যারিফের ফলে বেসরকারি খাতে পরিচালিত বিভিন্ন অপারেটরদের ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। এছাড়া সেবার বেসরকারি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো সব ধরনের নীতিমালা মেনে চলে ব্যবসা করছে। তারপরও কখনো কোন বিষয়ে সমস্যা দেখা দিলে বিটিআরসি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান হওয়ার কারণে বিটিআরসি কেবল এই ক্ষেত্রে নয়, অনেক ক্ষেত্রেই নীতিমালা লঙ্ঘন ও বিটিআরসিকে অবজ্ঞা করে চললেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। যা অন্যান্য ক্ষেত্রে নীতিমালা লঙ্ঘনের দৃষ্টান্ত স্থাপন হবে বলেও তারা মন্তব্য করেন। এছাড়া ব্যান্ডউইথের মূল্য ৩০০ টাকা নির্ধারণ নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কেননা বাংলাদেশ সাব মেরিন ক্যাবল কোম্পানী লিমিটেড এর মূল্য অনুযায়ী ১০ এমবিপিএস ব্যান্ডউইথের সর্বনিম্ন মূল্য ৬২৫ টাকা। তার কাছ থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়ে বিটিসিএল আরও কম মূল্যে বিক্রি করছে। এ বিষয়ে জানার জন্য বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দীন আহমেদ চৌধুরীকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। তবে এসএমএসের মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে বলেন, তাদের এই ট্যারিফ বিটিসিএল-এর বোর্ড অব ডিরেক্টরস অনুমোদিত। অন্যদিকে বিটিআরসি’র সিস্টেমস এন্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ এমদাদ উল বারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে এ সম্পর্কে কিছু জানা যায় নি।

Source