-তরিকুর রহমান সজীব
ইন্টারনেট সংযোগের বাহন হিসেবে মূলত অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তরের প্রক্রিয়ায় বদল এনে ইন্টারনেটের গতি প্রচলিত পরিমাণের চাইতে অনেকটাই বৃদ্ধি করার এক গবেষণায় সাফল্য পেয়েছেন একদল গবেষক। সিটি কলেজ অব নিউইয়র্ক, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগো এবং কর্নিং ইনকরপোরেটেডের গবেষকরা এই সাফল্যের কথা জানিয়েছেন। গবেষকদের একজন সিটি কলেজ অব নিউইয়র্কের শিক্ষার্থী গিওভান্নি মিলিওনি। এই গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ডাটাকে ‘টুইস্ট’ করার মাধ্যমে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তরের গতি অনেকটাই বাড়ানো সম্ভব। এক্ষেত্রে পৃথক পৃথক আলোকরশ্মি হিসেবে একাধিক ডাটা স্ট্রিমের আদান-প্রদান সম্ভব। সাধারণভাবে অপটিক্যাল ফাইবারে ডাটাকে আনটুইস্ট করা হলে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে আমরা দেখিয়েছি যে ডাটা গ্রহণের পর ডিজিটাল উপায়ে এই ডাটাকে রি-টুইস্টেড করা গেলে তা রিকভার করা সম্ভব।’ ডাটাকে এভাবে রিটুইস্ট করার জন্য গবেষকরা মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক ও ওয়াই-ফাই রাউটারে বহুল ব্যবহূত বেতার যোগাযোগ প্রযুক্তি মাল্টিপুল-ইনপুট, মাল্টিপুল-আউটপুট (এমআইএমও, মিমো নামে পরিচিত) ব্যবহার করেছেন। মিলিওনি বলেন, ‘আলোর টুইস্টগুলোকে আমরা অ্যান্টেনা হিসেবে ব্যবহার করেছি। এমনকি পাঠানো ডাটা আনটুইস্টেড হলেও এটি পৃথক একটি টুইস্ট বা অ্যান্টেনা হিসেবে গৃহীত হতে পারে এবং তা থেকে মূল ডাটা উদ্ধার করা সম্ভব।’ গবেষকরা পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের স্ট্যান্ডার্ড অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করে আলোর চারটি টুইস্টের মাধ্যমে চারটি ডাটা স্ট্রিম পাঠাতে সক্ষম হয়েছেন। এই গবেষণার সাফল্যের পেছনে অবশ্য গ্লাসগো ইউনিভার্সিটির তৈরি বিশেষ ধরনের একটি ডিভাইস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। একটি প্রিজম যেভাবে রঙকে বিশ্লিষ্ট এবং সংযোজিত করে, ঠিক একইভাবে এই ডিভাইসটি আলোর টুইস্টকে বিশ্লিষ্ট এবং সংযোজিত করতে পারে। ফলে এই উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির ব্যবহার সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষকরা। বিশেষ করে ফেসবুক বা ইউটিউবের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের সংযোগের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
Source