-স্টাফ রিপোর্টার
কলড্রপ, হিডেন চার্জ, প্যাকেজে অটো এ্যাকটিভ, অযৌক্তিক অফার বন্ধ করাসহ গ্রাহক প্রতারিত হয় এমন সমস্যা সমাধানে মোবাইল অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার পরিবর্তে কোন ধরনের প্রতারণা করলে টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন তিনি। এছাড়া কলড্রপ (কথা বলার সময় নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে কেটে যাওয়া) সমস্যা গ্রহণযোগ্য সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। অন্যত্থায় টাকা ফেরত, ক্ষতিপূরণসহ বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে। কলড্রপ সমস্যাসহ মোবাইল গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় তারানা হালিম এসব কথা বলেন। এসময় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসি) ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খান, রবি’র সিইও সুপুন বীরাসিংহে, এয়ারটেলের সিইও পিডি শর্মা, গ্রামীণফোনের সিইও রাজিব শেঠী, বাংলালিংক এর সিইও জিয়াত সাতারা, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দীন আহমেদ, এয়ারটেলের সিসিএও আশরাফ এইচ চৌধুরী প্রমুখ। সভায় প্রতিমন্ত্রী কলড্রপের বিষয়ে বলেন, আমরা গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করতে যে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করবো। একজন গ্রাহকেরও যেনো অভিযোগ না থাকে। আমরা প্রতিটি গ্রাহকের অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছি, নিয়ন্ত্রণ সংস্থা এবং অপারেটরদের সাথে মিলে গ্রাহক সেবা উন্নত করতে চাই। তিনি বলেন, থ্রিজি সার্ভিস থ্রিজি’র মতোই হতে হবে, থ্রিজি টুজি’র মতো হলে হবে না। আইটিইউ (আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন) এর প্যারামিটার অনুযায়ী কলড্রপ সহনীয় পর্যায়ে থাকতে হবে। ইন্টারনেটের মূল্য কমিয়ে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে আসতে হবে। অপারেটরগুলো কোন প্যাকেজ ঘোষণা করার পর যেনো অটো (স্বয়ংক্রিয়ভাবে) এ্যাকটিভ হয়ে না যায়। গ্রাহকরা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তা এ্যাকটিভ করা যাবে না। কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস উন্নত করতে হবে, সেখানে কল ফ্রি করার জন্যও অপারেটরদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। টেলিটকের বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, টেলিটককে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। দেশের কোথাও তাদের সার্ভিস পাওয়া যায় না বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। অনেকে টেলিটক সিম পকেটে নিয়ে ঘোরেন কিন্তু নেটওয়ার্ক ভালো না থাকায় তা ব্যবহার করে না। গ্রামীণফোনের সিইও রাজিব শেঠী বলেন, আমরা বিটিআরসি’র স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলি। কলড্রপের সব ধরনের ডাটা বিটিআরসিকে দিয়ে থাকি। বড় প্রতিষ্ঠান হিসেবে অভিযোগ তুলনামূলক বেশি আসবে এটাই স্বাভাবিক। গ্রাহকদের সবসময় উন্নত সেবা দিতে আমরা চেষ্টা করছি। রবি’র সিইও সুপন বীরাসিংহে ঢাকায় চাহিদা মতো নেটওয়ার্ক সাইটের জায়াগা পেতে সমস্যার কথা জানান। তিনি আরও বলেন, কলড্রপ আসলে এটি বহুপক্ষীয় সমস্যা। এই সমস্যার সমধান করতে হলে সবপক্ষের সঙ্গে বসতে হবে। টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দীন আহমেদ বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সারাদেশে থ্রিজি নেটওয়ার্ক বিস্তার করা হবে। তিনি টেলিটককে থ্রিজিতে এক নম্বর দাবি করলে তারানা হালিম বলেন, যেখানে নেটওয়ার্কই নাই সেখানে নিজেদের কিভাবে এক নম্বর দাবি করছেন। প্রতিমন্ত্রী মোবাইল ফোনে ওয়েলকাম টিউন হিসেবে গান ব্যবহার করার পরও শিল্পী-কূশলীদের কোনো রয়েলিটি না দেয়ার বিষয়টিও বৈঠকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিটিআরসির মহাপরিচালক এমদাদ উল বারী বলেন, কোম্পানিগুলোর এসব ডাটা আমাদের দেয়া মানেই তারা বিটিআরসির স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলছে, তা নয়। কারণ ওইসব ডাটা আমরা নিয়মিত দেখতে পারছি না। এগুলো দেখে যখন আমরা মতামত জানাব তখন বুঝা যাবে যে আপনারা (মোবাইল কোম্পানি) স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করছেন কি না। বিটিআরসি অনুমোদন না দেয়া পর্যন্ত বিটিআরসি’র নামে কোন তথ্য চালিয়ে না দেয়ার জন্যও তিনি অপারেটরদের বলেন।
Source