খবরের শিরোনামঃ সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় সক্ষমতার অভাব আছে

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১০-২২

-নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সাইবার অপরাধের ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতার অভাব আছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে গতকাল বুধবার আয়োজিত এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বিটিআরসির বিদায়ী চেয়ারম্যান। সুনীল বোস বলেন, ‘দিন দিন সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ সমস্যা মোকাবিলায় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। সম্প্রতি পুলিশের মহাপরিদর্শক সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তথ্য না পাওয়ার যে অভিযোগ করেছেন, তা সত্যি, কারণ আমাদের সেই সক্ষমতাই নেই।’ সাইবার অপরাধ দমনে সরকারের করণীয় সম্পর্কে সুনীল বোস বলেন, এসব বিষয় সামাল দিতে সক্ষম এমন দক্ষ লোকদের দিয়ে একটি বিশেষ দল প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তৈরি করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক প্রস্তাব এখন সরকারের বিবেচনায় আছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ সম্পর্কে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, যে প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে, তারা যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্যাটেলাইট ওড়াতে না পারে, তাহলে এর ক্ষতিপূরণ ওই কোম্পানিকে দিতে হবে। মুঠোফোনের কলড্রপ সম্পর্কে সুনীল কান্তি বোস বলেন, এটি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়। এ সমস্যা বাংলাদেশের চেয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে বেশি। বিভিন্ন অপারেটরের সঙ্গে এ বিষয়ে বিটিআরসি আলোচনা করেছে। অপারেটররা কল ড্রপের ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হয়েছে। কল ড্রপ একেবারে চলে যাবে না, তবে তা ন্যূনতম পর্যায়ে রাখার চেষ্টা অব্যাহত আছে। ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর বিটিআরসি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন সুনীল কান্তি বোস। এর আগে চার বছর তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। বিটিআরসিতে তিন বছরের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, কাজ করতে গেলে প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। প্রতিবন্ধকতা শুধু মন্ত্রণালয় থেকেই নয়, অনেক স্থান থেকেই আসে। ওই সব প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করেই ভালোভাবে কাজ করতে পেরেছি। নতুন গঠিত টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের কারণে বিটিআরসির কার্যপরিধি ও ক্ষমতা কমে যাবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সুনীল বোস বলেন, বাংলাদেশে যদি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন না হতো, তাহলে এ খাতের এত উন্নতি হতো না। এ দেশে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনো দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের মাঝামাঝি একটি অবস্থানে আছে। বিটিআরসির উচিত সরকারের কাছে কোনো কিছু না লুকানো। আর সরকারেরও উচিত বিটিআরসি কীভাবে চলবে, তা নির্ধারণ করা। দেশে লাভজনকভাবে ছয়টি মোবাইল অপারেটর চলতে পারে না বলে মনে করেন সুনীল কান্তি বোস। বর্তমানে গ্রামীণফোন, রবির পাশাপাশি গত বছর থেকে বাংলালিংক মুনাফা করছে বলে জানান তিনি। সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের লাভজনক না হওয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘টেলিটক যেভাবে চলছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’ দেশে আন্তর্জাতিক কল-সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে বলে মনে করেন সুনীল কান্তি বোস। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১২ সালে আমি যখন দায়িত্ব নিই, তখন দেশে বৈধ কল ছিল তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি মিনিট। এরপর থেকে বিটিআরসির গৃহীত পদক্ষেপে তা বাড়তে থাকে। বিটিআরসি সচিব সরওয়ার আলমের সঞ্চালনায় এ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে ২৫ অক্টোবর দায়িত্ব নেবেন শাহজাহান মাহমুদ।

Source