-নিজস্ব প্রতিবেদক
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অনিয়ম রোধে এবং হিসাবধারীর তথ্য যাচাই-বাছাই করতে ব্যাংকগুলোকে নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেইস ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া দরকার। একই সঙ্গে ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এ খাতের অপরাধ দমনে একযোগে কাজ করতে হবে। গতকাল রবিবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত "মোবাইল ফিন্যান্সিং সার্ভিসেস : দ্য রাইট ডেলিভারি পারসপেক্টটিভ' বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বক্তারা। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ডিসিসিআই সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি হোসেন খালেদ।
এ সময় আলোচকরা বলেন, দেশের প্রান্তিক মানুষের কাছে সহজে টাকা পৌঁছে দেওয়ায় সারা দেশে মোবাইল ব্যাকিংয়ের সেবা বাড়ছে। তবে এটা শুধু অর্থ লেনদেনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অন্যান্য খাতেও এই সেবা পরিধি বাড়ানো দরকার বলে আশা করেন আলোচনা সভার বক্তারা। বক্তারা জানান, ২০১২ সালের মার্চে মোট মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ এফএমএসের আওতায় ছিল, সেখানে ২০১৫ সালের জুনে এসে এটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ শতাংশ।
গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা তথ্য যাচাইয়ের জন্য নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেইস ব্যবহারের অনুমতি প্রদান, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং টেলিযোগাযোগ সংস্থাগুলোর সঙ্গে যথাযথ সমন্বয় সাধন, এ খাতে আরোপিত সার্ভিস চার্জ কমানো, সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধন এবং আরো বেশি সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে এ সেবার আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাকে শুধু টাকা পাঠানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে এটাকে আরো বৃহৎ পরিসরে ব্যবহারের জন্য সবার কাজ করতে হবে। তিনি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ, পানি প্রভৃতি সেবার বিল প্রদানের ক্ষেত্রে আরো উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।
গ্রামীণফোনের পরিচালক সৈয়দ ইশতিয়াক বলেন, সরকার যদি দেশের মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির মধ্যে আনতে চায় তাহলে এফএমএস খাতের অংশীদারত্ব আরো বাড়াতে হবে। এ জন্য মোবাইল ব্যাকিংয়ের মালিকানার ওপর একটি যৌক্তির সময় পর্যন্ত সীমাবদ্ধতা উঠিয়ে দেওয়া উচিত। কারণ মালিক বা অপারেটর যে হোক না কেন, বর্তমানে এখানে মনোপলি ব্যবসার সুযোগ নেই।
বিকাশের চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার শেখ মনিরুল ইসলাম রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে প্রতারণা ঠেকাতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার এবং যথাযথ মনিটরিংয়ের পরমর্শ দেন।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি এ সেবাকে জনগণের দোরগোরায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এ খাতের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আলোচনা করেন ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ডিএমডি আবুল কাসেম মো. শিরিন, আইএফআইসি ব্যাংকের ডিএমডি রায়হান উল আমিন প্রমুখ।
Source