-নিজস্ব প্রতিবেদক
সিম নিবন্ধনে গ্রাহকের দেওয়া তথ্য যাচাইয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডার ব্যবহার করার সুযোগ পেতে যাচ্ছে মোবাইল অপারেটররা। নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন বিভাগের (এনআইডি) সঙ্গে এ জন্য দেশের ছয় মোবাইল অপারেটরের চুক্তি হবে আজ।
মোবাইল অপারেটর সূত্রে জানা গেছে, আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার এ চুক্তি হবে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রতিটি মোবাইল অপারেটর নির্বাচন কমিশনে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছে। আর প্রতিটি জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ব্যবহার করতে মোবাইল অপারেটরদের দিতে হবে দুই টাকা।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনও (বিটিআরসি) এ চুক্তি করতে মোবাইল অপারেটরদের অনাপত্তিপত্র দিয়েছে। ইসির নিয়ম অনুযায়ী, যে পক্ষের সঙ্গে চুক্তি করা হয়, তারাই এনআইডি তথ্যভান্ডারের তথ্য পেয়ে থাকে। এ নিয়মের কারণে বিটিআরসি সরাসরি ইসি থেকে কোনো তথ্য পাবে না। বিটিআরসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গ্রাহক যাচাইয়ের তথ্য মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে সংগ্রহ করবে কমিশন, আগে এটি ইসি থেকে সংগ্রহ করার পরিকল্পনা ছিল।
সিম কেনার সময় একজন গ্রাহক সঠিক তথ্য দিচ্ছেন কি না, এত দিন এ টি যাচাই করার সুযোগ ছিল না মোবাইল অপারেটরদের। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডার ব্যবহারের সুযোগ পাওয়ায় মোবাইল অপারেটররা এখন একজন গ্রাহকের এনআইডি নম্বর, জন্মতারিখ ও আঙুলের ছাপ ঠিক আছে কি না, তা যাচাই করতে পারবে।
রবি আজিয়াটার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মুখপাত্র ইকরাম কবীর গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবশ্যই এটি একটি বড় পদক্ষেপ। চলমান সিম নিবন্ধন-প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এটি বড় ভূমিকা রাখবে।’
এদিকে সিম নিবন্ধনে আঙুলের ছাপ পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু করার জন্য বিটিআরসিকে চিঠি দিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এনআইডি তথ্যভান্ডারের মাধ্যমে তথ্য যাচাই করার সুযোগ না থাকায় এ সময়ের মধ্যে আঙুলের ছাপ পদ্ধতি শুরু করার বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমানে মোবাইল অপারেটররা তাদের গ্রাহক নিবন্ধনের তথ্য এনআইডির কাছে সরবরাহ করছে। এনআইডি ওই সব তথ্য তাদের কাছে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডারের সঙ্গে যাচাই-বাছাই করছে। আবার যেসব প্রকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে একাধিক সিম নিবন্ধিত আছে সেই তথ্যও বের করার কাজ করছে।
সরকার গত ২৭ অক্টোবর ২০১২ সালের আগে কেনা সিম ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের সময়সীমা বেঁধে দেয়। এ জন্য গত ১৫ অক্টোবর থেকে গ্রাহকদের খুদে বার্তা পাঠানো শুরু করে মোবাইল অপারেটররা। আর ২০১২ সালের পরে কেনা সিমের জন্য গ্রাহকেরা নিজেরাই নিবন্ধনের সত্যতা যাচাই করতে পারবেন। এ জন্য মুঠোফোনের খুদে বার্তায় ইংরেজিতে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী জন্মতারিখ, পূর্ণ নাম লিখে ১৬০০ নম্বরে পাঠাতে হবে।
এ সময়ের মধ্যে নিবন্ধন না করা হলে সিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে পরে কোনো গ্রাহক উপযুক্ত কাগজপত্র দেখালে বন্ধ সিম চালু করার বিষয় বিবেচনা করা হবে।
Source