-বণিক বার্তা ডেস্ক
ইন্টারনেট সংযুক্ত প্রযুক্তিপণ্যের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। সেসঙ্গে বাড়ছে এসব পণ্যের ব্যবহার। বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস ইন্টারনেটে সংযুক্ত করার প্রযুক্তিকে বলা হচ্ছে ‘ইন্টারনেট অব থিংস’ বা আইওটি। সংশ্লিষ্ট খাতের প্রসার এতটাই ক্রমবর্ধমান যে, আগামী পাঁচ বছরে অর্থাত্ ২০২০ সালে ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভাইসের সংখ্যা ৩ হাজার ৪০০ কোটি ইউনিট ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভাইসের সংখ্যা এক হাজার কোটি ইউনিট; যা প্রতি বছর ২৮ শতাংশ বেড়ে উল্লিখিত ইউনিটে পৌঁছবে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিআই ইন্টেলিজেন্সের এক প্রতিবেদনে এমনটা দাবি করা হয়। খবর বিজনেস ইনসাইডার।
প্রযুক্তি পণ্যের ব্যবহার ও ইন্টারনেট সেবার প্রসারের ফলে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রযুক্তি প্রবণতা হলো ইন্টারনেট অব থিংস। স্মার্টফোন ও ট্যাবলেট ডিভাইসের পর এখন স্মার্টঘড়ি থেকে শুরু করে স্মার্টব্যান্ড— সব কিছুকেই যুক্ত করা হচ্ছে ইন্টারনেটে।
বিআই ইন্টেলিজেন্স বিশ্লেষকদের মতে, মোট সংযুক্ত ডিভাইসের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, এমন ডিভাইসই থাকবে সবচেয়ে বেশি। এ ধরনের সংযুক্ত ডিভাইসের সংখ্যা বর্তমান ৪২০ কোটি ইউনিট থেকে বেড়ে আগামী পাঁচ বছরে ২ হাজার ৪০০ কোটি ইউনিটের ঘরে পৌঁছবে। অর্থাত্ ইন্টারনেট সংযুক্ত মোট ৩৪ বিলিয়ন ইউনিট ডিভাইসের ৭৩ শতাংশই থাকবে নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, এমন ডিভাইস।
বর্তমানে স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটের মতো মোবাইল ডিভাইসের পাশাপাশি ফিটনেস ট্রেকার, পরিধেয় প্রযুক্তি পণ্যসহ অন্যান্য ইন্টারনেটসংশ্লিষ্ট ডিভাইসের ব্যবহার বাড়ছে। বাড়িঘরের প্রয়োজনীয় অনেক ডিভাইস এখন ইন্টারনেট সংযুক্ত। স্মার্ট টেলিভিশন থেকে শুরু করে ঘরের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্রেও এখন ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। আর এ ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ২০২০ সাল নাগাদ স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, পার্সোনাল কম্পিউটার, স্মার্টঘড়ি, ইন্টারনেট সংযুক্ত টিভি এবং ঐতিহ্যবাহী নয় এমন রিমোট ডিভাইসের সংখ্যা এক হাজার কোটি ইউনিট ছাড়িয়ে যাবে।
অন্যদিকে আগামী পাঁচ বছরে ইন্টারনেট অব থিংস খাতে বৈশ্বিকভাবে ব্যয়ের পরিমাণ ৬ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে। আর এ সময় প্রযুক্তি খাতে ব্যবসা প্রসারের গুরুত্বপূর্ণ খাত হবে আইওটি। তিনটি উপায়ে সংশ্লিষ্ট খাতে ব্যবসা প্রসারে ভূমিকা রাখবে এ খাত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে তুলনামূলক কম পরিচালন ব্যয়, উত্পাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নতুন বাজারগুলোয় বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও নতুন আঙ্গিকের পণ্য উন্নয়নে।
আগামী পাঁচ বছরে বিভিন্ন দেশের সরকার আইওটি ইকোসিস্টেমের দ্বিতীয় বৃহত্ নিয়ন্ত্রক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। মূলত ইন্টারনেট সংযুক্ত প্রযুক্তি পণ্য উত্পাদন বৃদ্ধি, মূল্য কমানো এবং নাগরিকদের জীবনযাপনের মান উন্নয়নে অধিক মনোযোগ দেবে।
এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি পর্যায়ে আইওটিসংশ্লিষ্ট পণ্য ব্যবহারের তুলনায় সাধারণ গ্রাহকরা পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানেও ইন্টারনেট সংযুক্ত পণ্য ক্রয়ের দিক থেকে এগিয়ে আছে ব্যবসা ও সরকারি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তবে স্মার্টহোম বা স্মার্টসিটি বাণিজ্যিকভাবেও ব্যাপক লাভের সম্ভাবনা রাখে। দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেট সংযুক্ত পণ্য আমাদের জীবনে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে আসতে পারে বলে এগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আর সে কারণেই আগামীতে ইন্টারনেট অব থিংস বা আইওটি পণ্য প্রযুক্তি খাতে রাজস্ব করবে।
Source