খবরের শিরোনামঃ টেলিনরের সিএফওসহ চার কর্মকর্তা বরখাস্ত

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১১-১৩

-বণিক বার্তা ডেস্ক
ভিম্পেলকম ইস্যুকে কেন্দ্র করে নরওয়েভিত্তিক টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা টেলিনরের জ্যেষ্ঠ চার কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ চার কর্মকর্তা হলেন— প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) রিচার্ড ওলাভ আ, উপদেষ্টা পল উইন এস্পেন এবং অন্য দুজন টেলিনরের থাইল্যান্ড কার্যক্রমের ফিন্যান্স পরিচালক ফ্রিডজফ রাস্টেন ও টেলিনর হাঙ্গেরির ব্যবস্থাপক ওলে বিয়র্ন। বুধবার রাতে তাদের বরখাস্তের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। শীর্ষস্থানীয় এ চার কর্মকর্তার মধ্যে ফ্রিডজফ রাস্টেন এবং ওলে বিয়র্ন টেলিনর মনোনীত ভিম্পেলকমের ব্যবস্থাপক ছিলেন। উজবেকিস্তানে লাইসেন্স পেতে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়ার অভিযোগ রয়েছে ভিম্পেলকমের বিরুদ্ধে। বিষয়টি ঘিরে তদন্ত করছে মার্কিন ও ডাচ কর্তৃপক্ষ। আর প্রতিষ্ঠানটির ৩৩ শতাংশ শেয়ারের মালিকানায় আছে টেলিনর। টেলিযোগাযোগ খাতের এ দুর্নীতির ঘটনা নরওয়ে সরকারের মধ্যেও ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ টেলিনর ভিম্পেলকমের বড় শেয়ারহোল্ডারের মধ্যে অন্যতম। অন্যদিকে টেলিনরের ৫৪ শতাংশ শেয়ারের মালিক নরওয়ে সরকার। বিষয়টি ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, ভিম্পেলকমের মাধ্যমে টেলিনরের দুর্নীতির বিষয়ে কতটুকু অবগত আছে নরওয়ে সরকার? যার কারণে এ ইস্যুতে অনেকটা নড়েচড়ে বসেছে নরওয়ে প্রশাসন। গত ৩০ অক্টোবর একই ইস্যু কেন্দ্র করে টেলিনরের চেয়ারম্যান সভেন অ্যাসারকে পদত্যাগ করতে হয়। মূলত দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে অনেক দেরিতে হস্তক্ষেপ করায় তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করে আসা সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জন ফ্রেডরিক বাকসাসকে টেলিনরের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়। টেলিনরের বিবৃতি অনুযায়ী, বহিষ্কৃত চার কর্মকর্তা ভিম্পেলকমের বিষয়টি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার কোনো অভিযোগ নেই। তারা সবাই টেলিনরের বিশ্বস্ত ব্যবস্থাপক ছিলেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে তারা টেলিনরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমাদের বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই যে, তারা ভিম্পেলকমের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু ভিম্পেলকম ইস্যুতে টেলিনরের পরিচালনা পর্ষদের ভূমিকার বিষয়টি এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়ে স্বতন্ত্রভাবে অনুসন্ধানের জন্য ডেলয়েটকে নিযুক্ত করা হয়। সর্বশেষ ডেলয়েটের পরামর্শ মোতাবেক পারস্পরিক সমঝোতায় আসে টেলিনর। সিএফও রিচার্ড ওলাভ আ এবং উপদেষ্টা পল উইন এস্পেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আর এটা বলবত্ থাকবে ভিম্পেলকম ইস্যু নিয়ে চূড়ান্ত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত। আপাতত নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মর্টেন কার্লসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান অর্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে টেলিনরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকটি নির্বাহী পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। কার্লসেন বর্তমানে টেলিনরের নির্বাহী ব্যবস্থাপনা টিমেরও অংশ। তিনি ২০১৫ সালেই ভিম্পেলকমের তত্ত্বাবধায়ক পর্ষদে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু টেলিনরের সিএফও হিসেবে যোগ দেয়ায় এরই মধ্যে ওই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন, যা কার্যকর হয়েছে। যেহেতু উজবেকিস্তানে ভিম্পেলকমের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত চলমান, তাই এ ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, এর আগে সুইডিশ-ফিনিশ টেলিকম প্রতিষ্ঠান টেলিয়াসোনেরার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায় উজবেকিস্তানে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির তত্কালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েকজনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এছাড়া এশিয়া, ককেশাস ও মলদাভিয়ার বেশ কয়েকটি বাজার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। ভিম্পেলকমের ভাগ্যে কী আছে, তা তদন্ত-পরবর্তী সময়ই বলে দেবে বলে মন্তব্য করেন বিশ্লেষকরা।

Source