খবরের শিরোনামঃ আইওএফের মতো সংগঠন করতে চায় আইসিএক্স

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১১-০৯

-আশরাফুল ইসলাম
টেলিযোগাযোগ খাতে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে নতুন একটি কল সংযোগ ব্যবস্থাপনা তৈরির পরিকল্পনা করছে ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) অপারেটররা। এ জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) একটি প্রস্তাবনাও জমা দিয়েছে তারা। বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, আইসিএক্স অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব আইসিএক্স অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এআইওবি) বিটিআরসিকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে। এ চিঠিতে সই করেছেন সংগঠনটির সভাপতি নাজিব আহমেদ। নতুন এ প্রস্তাবটি অনেকটা আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটরদের বিতর্কিত সংগঠন আইজিডব্লিউ অপারেটর ফোরামের (আইওএফ) মতো। দেশি-বিদেশি কল গ্রাহক পর্যন্ত পৌঁছানোর সংযোগমাধ্যম হিসেবে কাজ করে আইসিএক্স অপারেটর। দেশের ভেতরে মুঠোফোন বা ল্যান্ডফোন থেকে যেসব কল গ্রাহকেরা করেন, সেটি সংশ্লিষ্ট অপারেটর হয়ে গ্রাহক পর্যন্ত পৌঁছানোর মাধ্যম হিসেবে কাজ করে আইসিএক্স। আবার বিদেশ থেকে যেসব কল দেশে আসে, তা আইজিডব্লিউ অপারেটরের মাধ্যমে আইসিএক্সের কাছে পাঠানো হয়। এরপর মোবাইল অপারেটর বা এএনএসের মাধ্যমে কলটি গ্রাহকের কাছে যায়। এর মাধ্যমেই দেশি গ্রাহকেরা বিদেশ থেকে আসা কলে কথা বলতে পারেন। দেশে বর্তমানে ২৬টি আইসিএক্স অপারেটর আছে। দেশে বর্তমানে ২৩টি আইজিডব্লিউ অপারেটর থাকলেও আইওএফের চালু করা নিয়মে মাত্র সাতটি অপারেটর কল টার্মিনেট বা গ্রাহক পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। একই লাইসেন্স পেয়েও বাকি ১৬টি আইজিডব্লিউ গ্রাহক পর্যন্ত কল পাঠাতে পারে না। আন্তর্জাতিক কল নিয়ন্ত্রণের জন্য ওই সাত আইজিডব্লিউ নিজেরাই একটি কল আনার ব্যবস্থা বা কমন ইন্টারন্যাশনাল পয়েন্ট (সিআইপি) তৈরি করেছে। বিদেশ থেকে কল আনার এই পদ্ধতি গত বছরের সেপ্টেম্বরে চালুর অনুমোদন দেয় সরকার। আইজিডব্লিউ অপারেটররা দেশে এখন যেমন দুই স্তরে কল নিয়ে আসে, আইসিএক্সরাও একইভাবে যাতে দুই স্তরে গ্রাহক পর্যন্ত কল পৌঁছাতে পারে, সেটি বিবেচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বিটিআরসিকে। নতুন এই স্তর চালু হলে আইজিডব্লিউ অপারেটরদের সঙ্গে আইসিএক্স অপারেটরদের বকেয়া নিয়ে জটিলতা দূর হওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। বিটিআরসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিদেশি কল-সংখ্যা বাড়ানোর জন্য আইওএফকে পরীক্ষামূলকভাবে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, আইসিএক্স অপারেটরদের এমন সুযোগ দেওয়ার দরকার নেই। এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য এআইওবির সভাপতি নাজিব আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি। চলতি বছর আইসিএক্স অপারেটরদের কাছে বিটিআরসি তথা সরকারের বকেয়া দাঁড়িয়েছে ৭৪৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। পাওনা বকেয়া রেখে এখন থেকে কোনো আইসিএক্স ও আইজিডব্লিউ যাতে কার্যক্রম চালাতে না পারে, সে জন্য সম্প্রতি নতুন একটি নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বিটিআরসি। নতুন নীতিমালায় সেবা দেওয়ার পূর্বে আইসিএক্স ও আইজিডব্লিউ অপারেটরদের ব্যাংক জামানত, সেবার পূর্বে নগদ ও অগ্রিম পরিশোধ (প্রিপেইড), সম্পদের তফসিল সংযুক্ত করার মতো বিষয়গুলো যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এখন থেকে সেবা দিতে হলে আইজিডব্লিউ, আইসিএক্স অপারেটরদের একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে অগ্রিম জমা রাখতে হবে। যেসব আইসিএক্স অপারেটর বকেয়া পরিশোধ করছে না, তাদের বকেয়া পরিশোধে ১০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বকেয়া শোধ না করলে সংশ্লিষ্ট আইসিএক্সের কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ৪০ শতাংশ ও ৮০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি।

Source