-যুগান্তর রিপোর্ট
পাওনা আদায়ের দাবিতে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক-কর্মচারীরা। সোমবার সকাল ১১টায় রাজধানীর বসুন্ধরায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে গ্রামীণফোন কর্মচারী ইউনিয়ন।
এ সময় কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠানটির নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষুব্ধরা জানান, শ্রম আইন অনুযায়ী, লাভজনক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশের অর্থ পাঁচ শতাংশ হারে ‘ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডে’ জমা রাখার নিয়ম। সে অনুযায়ী ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির লভ্যাংশের প্রায় ৬৯১ কোটি টাকা শ্রমিকদের জন্য জমা রাখার কথা। কিন্তু এ অর্থ থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। নেতারা বলেন, দ্রুত দাবি মানা না হলে শ্রমিক-কর্মচারীরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। রোববার গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী এবং ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৬৯১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।
সমাবেশে বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা জানান, গ্রামীণফোন ওয়ার্কার্স প্রফিট ফান্ড অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার ফান্ডের ১৩শ’ কর্মচারীর প্রায় ৭শ’ কোটি টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে আÍসাৎ করেছে। পাওনা টাকার জন্য আবেদন করলে তাদের বিভিন্নভাবে অপমান ও অপদস্থ করা হয়। তাই তারা আদালতে মামলাও করেছেন।
তারা বলেন, ২০১০ সালে সরকার কোম্পানির লাভের ৫ শতাংশ শ্রমিক-কর্মচারীর মধ্যে বণ্টন করার জন্য ঘোষণা দেয়। ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর গ্রামীণফোন পরিচালক সভায় তা পাস করা হয়। চলতি বছরের মার্চে বিবাদীরা শ্রমিকদের বঞ্চিত করে টাকা না দিয়ে ভাগ-বাটোয়ারা করে আÍসাৎ করেন।
শ্রম আইন অনুযায়ী, ১০০ জনের বেশি কর্মী সংখ্যার কোনো কোম্পানির হিসাব বছরের শেষদিনে পরিশোধিত মূলধন ১ কোটি টাকা এবং স্থায়ী সম্পদ দুই কোটি টাকা হলে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল কিংবা শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে বার্ষিক লভ্যাংশের ৫ শতাংশ জমা দিতে হয়। আইনে বলা আছে, প্রত্যেক বছর অংশগ্রহণ তহবিলে জমাকৃত মোট অর্থের দুই-তৃতীয়াংশ সমান অনুপাতে সব সুবিধাভোগীদের মধ্যে নগদে বণ্টন করা হবে এবং এক-তৃতীয়াংশ শ্রম আইনের ২৪০ (১১) ধারা মোতাবেক বিনিয়োগ করা হবে, যার মুনাফা সুবিধাভোগীদের মধ্যে সমান অনুপাতে বণ্টন হবে।
ক্ষুব্ধ কর্মচারীরা আরও বলেন, জুলাইয়ে ফান্ডের টাকা দেয়ার একটি প্রক্রিয়া শুরু হয় কিন্তু তখন শ্রমিকদের টাকা না দিয়ে শুধু অফিসারদের টাকা দেয়া হয়েছিল। কোনো শ্রমিক এ ফান্ডের টাকা পাননি। তাদের দাবি, গ্রামীণফোনের বিভিন্ন বিভাগের তিন হাজার কর্মচারী প্রায় ৭০০ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠানের কাছে পাবে।
Source