-আবদুল কাদের যশোর
যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। আগামী ডিসেম্বরে পার্কটির কার্যক্রম চালু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। শহরের বেজপাড়া এলাকায় এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ২৮৩ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কটি চালু হলে বদলে যাবে পুরো খুলনা বিভাগের অর্থনৈতিক চিত্র। এতে ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
যশোর সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তথ্য ও প্রযুক্তিতে আগ্রহী ২০ হাজার মানুষ এ পার্কে কাজের সুযোগ পাবেন। কম্পিউটারের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ফ্রি-ল্যান্সিং, কল সেন্টার ও রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট— এ চার সেক্টরে দেশ-বিদেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের সুযোগ পাবেন। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এ পার্কের উদ্বোধন হবে। তখন মানুষ সীমিত আকারে এখানে কাজ করতে পারবেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে পুরোদমে। এ পার্ক কেন্দ্র করে ওই এলাকার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনাও সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইডিইবি) কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি এমআর খায়রুল উমাম বলেন, ‘আইটি পার্ক ঘিরে এ অঞ্চলের মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। পার্কের আশপাশের মানুষেরও হয়তো কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ কারণে আমরা আশাবাদী হয়ে উঠেছি।’
এ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিসিএল অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের আবাসিক প্রকৌশলী মোরশেদুল আলম জানান, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় সাড়ে নয় একর জমি ও জলাধারের ওপর প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। প্রকল্পের মূল ভবন ভূমিকম্প প্রতিরোধক কম্পোজিট কাঠামোয় (স্টিল ও কংক্রিট) নির্মিত হচ্ছে। প্রথম দফায় ১৫ তলা ভিত্তির ওপর পাঁচতলা ভবন নির্মিত হচ্ছে। পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের পাঁচটি অংশে কাজ করছে বলে তিনি জানান।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এখানে তৈরি করা হবে ‘ইকো ট্যুরিজম পার্ক’। এ পার্কে কাজ করতে আসা ২০ হাজার কর্মীর চোখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পার্কের মূল ভবনের সামনে পাঁচ একর একটি বিশাল জলাধার থাকছে, যেখানে স্বচ্ছ পানিতে থাকবে দেশী-বিদেশী নানা প্রজাতির মাছসহ জলজ প্রাণী। এছাড়া থাকবে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। মূল ভবনের দক্ষিণ পাশে থাকবে সবুজবেষ্টনী। সেখানে কর্মীদের হাঁটার জন্য থাকবে আঁকা-বাঁকা পথ, নকশায় যার নাম রাখা হয়েছে ‘গ্রিন জোন’। কাজের মাঝে একটু স্বস্তির জন্য এ বেষ্টনীতে ঘুরতে পারবেন পার্কের কর্মী ও সেবা নিতে আসা মানুষ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উদ্বোধনের সময় ‘বেকারত্ব নিরসন, উত্পাদনমুখী জনবল সৃষ্টি এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে যশোরে আন্তর্জাতিক মানের একটি আইটি পার্ক স্থাপনের ঘোষণা দেন। ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিজ্ঞান এবং তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ নজরুল ইসলাম খান একটি চিঠি পাঠান। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাইয়ের পর ২০১৪ সালের ২৫ এপ্রিল যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকায় এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়।
Source