-আশরাফুল ইসলাম
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনের বাস্তব সমস্যা সমাধানে মুঠোফোনভিত্তিক ইন্টারনেট দিনে দিনে কার্যকর হয়ে উঠছে। একই সঙ্গে দক্ষ মানবসম্পদ বৃদ্ধি এবং উদ্যোক্তা তৈরিতেও এটি ভূমিকা রাখছে। আর মুঠোফোন ও ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন সেবার মাধ্যমে সামাজিক ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখছে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন।
প্রথম আলোসহ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেছেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজীব শেঠি। ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
রাজীব শেঠি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ইন্টারনেটের ক্ষমতা অসীম। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের নিভৃত গ্রামে বাস করা এক তরুণের জন্য এটা সত্যিই চমৎকার একটি ব্যাপার। কিছুদিন আগে আমি বরিশালের প্রত্যন্ত একটি এলাকায় যাই। সেখানে এক তরুণের সঙ্গে আমার কথা হয়। তাঁকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, ইন্টারনেট দিয়ে আপনি কী করেন? তিনি জানান ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করার কথা। এমন অনেক উদাহরণ আমি এ দেশে দেখেছি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের জীবনধারা পরিবর্তন করছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট দিয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা।’
ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে রাজীব শেঠি জানান, ‘মাত্র দুই বছরের কম সময়ে গ্রামীণফোনের থ্রিজি সাইটের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এখন দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ গ্রামীণফোনের থ্রিজি নেটওয়ার্কের আওতায় আছে। এটি আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।’
ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ানোর সমস্যা সম্পর্কে গ্রামীণফোনের সিইও বলেন, এ দেশের ইন্টারনেট ব্যবহার এখনো ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমনির্ভর। গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হলে গ্রামের মানুষ প্রতিদিনের জীবনে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হয়, তার বাস্তব সমাধান করতে হবে। এ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানসম্মত শিক্ষা পাওয়া এখনো কঠিন, একইভাবে মানসম্মত চিকিৎসক ও চিকিৎসার অভাব রয়েছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয়, সেগুলোর সমাধান মুঠোফোন ও ইন্টারনেটে দিতে পারলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এগুলোর ব্যবহার এমনিতেই বাড়বে।
দক্ষ মানবসম্পদ ও উদ্যোক্তা তৈরি প্রসঙ্গে রাজীব শেঠি বলেন, এ দেশের তরুণদের অভিনব উদ্যোগ ও আইডিয়ার কোনো অভাব নেই। তবে এসব অভিনব উদ্যোগ বাণিজ্যিকভাবে সফল করতে প্রয়োজনীয় পুঁজি ও প্রশিক্ষণের অভাব আছে। এ জন্য স্টার্টআপ ঢাকা, জিপি একসেলেটরের মতো কর্মসূচি শুরু করেছে গ্রামীণফোন। একটি সত্যিকারের ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরিতে পদেক্ষপগুলো কার্যকর হবে।
গ্রাহক প্রত্যাশা সম্পর্কে রাজীব শেঠি বলেন, ‘গ্রামীণফোনের কাছে গ্রাহকের প্রত্যাশা যেহেতু সবচেয়ে বেশি, সেহেতু আলোচনা-সমালোচনাও বেশি। আমাদের নেটওয়ার্কের মান বিশ্বের অধিকাংশ উন্নত দেশের সমপর্যায়ের। থ্রিজিতে আমাদের কল ড্রপ শূন্য দশমিক ৩ শতাংশের কম, আর গড় কল ড্রপের হার ১ শতাংশ। গ্রামীণফোনের থ্রিজি ইন্টারনেটের গড় গতি এক এমবিপিএসের (মেগাবাইট প্রতি সেকেন্ড) চেয়ে বেশি। একটা বিষয় নিশ্চিত করতে চাই, সেবার মানের দিক দিয়ে গ্রামীণফোন সব সময় এগিয়ে আছে এবং ভবিষ্যতেও তা থাকবে।’
Source