-
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, নারীর প্রতি অবমাননা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রোধে আপত্তিকর পোস্ট বন্ধ করার জন্য ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তি করার চেষ্টা করছে সরকার। এজন্য তিনি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে (বিটিআরসি) প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল (মঙ্গলবার) বিটিআরসি পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তারানা হালিম বলেন, ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ফেসবুকের সাথে চুক্তি করার সুযোগ এসেছিলো। কিন্তু সাব মেরিন ক্যাবলের মতো এই সুযোগকেও সেই সরকার কাজে লাগাতে পারেনি। যার ফল এখন ভোগ করতে হচ্ছে। এই ফেসবুককে ব্যবহার করে ভয়াবহ সাইবার অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। অনেক নারীর মানহানি হচ্ছে। অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করছে। ফেসবুককে ব্যবহার করে মানহানিকর পোস্ট দেয়া হচ্ছে, দেশকে অস্থিতিশীল করা এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কাজে নানা পোস্ট দেয়া হচ্ছে। এজন্য সরকার ফেসবুকের সাথে চুক্তি করতে চায়। সাইবার সিকিউরিটির বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো কাজ করতে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। সাইবার অপরাধের বিষয়ে প্রত্যেকটি অভিযোগের সমাধান করার কথাও বলেন তিনি। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ব্যক্তিস্বার্থেও ঊর্ধ্বে উঠে বিটিআরসি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ সরকার ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের বাইরে ব্যক্তিস্বার্থে কাজ করছেন। যে কোনো ধরনের দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিষয়ে আপস করা হবে না। পরস্পর বিরোধী কাজে না জড়িয়ে দক্ষতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। তারানা হালিম বলেন, যারা দক্ষতার সাথে এবং ভালোভাবে কাজ করবে তাদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হবে এবং যারা অবহেলা করবে অনৈতিক কাজে জড়াবে তাদের জন্যও বদলিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একটি প্রতিষ্ঠান গতিশীল করতে এগুলো প্রয়োজন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বিটিআরসি চেয়ারম্যানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিটিআরসি স্বাধীনভাবে কাজ করবে, মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ধরনের অন্যায় চাপ ও সুপারিশ আসবে না। তবে বিটিআরসিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করতে হবে। যাদের নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে তাদের সাথে যেনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক না হয়। প্রতিযোগিতার বাজারে সকলকে সমানভাবে দেখতে হবে। কারো কাছ থেকে কোনো ধরনের সুযোগ বা উপহার (এক বোতল পানিও না) নেয়া যাবে না। গ্রাহকদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে ইন্টারনেটের মূল্য কমানো, দ্রুতগতি, ভালো মানের সেবা দেয়ার জন্যও বিটিআরসির প্রতি তিনি আহ্বান জানান।ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শওকত মোস্তফা বলেন, বিটিআরসিকে শক্তিশালী করার জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। কমিশন যেনো স্বাধীনভাবে তার কাজ করতে পারে এবং সঠিকভাবে পরিচালিত হয় তার জন্য সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, কমিশন ও মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কোনো গ্যাপ যেনো না থাকে সেটি এখন থেকে নিশ্চিত করা হবে। তবে কমিশন যে উদ্দেশ্য-লক্ষ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো তা যেন ক্ষুণ্য না হয় এবং স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসি’র ভাইস-চেয়ারম্যান, কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
Source