-যুগান্তর রিপোর্ট
ফেসবুক বন্ধের নির্দেশনা থাকলেও বিকল্প পন্থায় প্রক্সি সার্ভার কাজে লাগিয়ে সারা দেশে এর ব্যবহার চলছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হচ্ছে। একইভাবে চলছে ভাইবার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমু, লাইনসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) অবশ্য বলছে, ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধের নির্দেশনা অব্যাহত আছে। যাতে এটা কেউ ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য তারা দেশের ২৬টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) ব্লক করে দিয়েছে। বিটিআরসির মতে, এরপরও কেউ এসব ব্যবহার করলে তারা বিকল্প পদ্ধতিতে তা করছেন। এর আগে বুধবার নিরাপত্তাজনিত কারণে এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিটিআরসির বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এটা (ফেসবুক, ভাইবার ইত্যাদি) সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব নয়। কারণ এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের জন্য অসংখ্য বিকল্প পদ্ধতি আছে। একমাত্র কমন সার্ভার ছাড়া এটা সম্পূর্ণ বন্ধ করা সম্ভব নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বিশেষজ্ঞ জানান, অন্য দেশের রোমিং করা সিম দিয়ে সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা সম্ভব। সরকারের পক্ষে এই সিম বন্ধ করার কোনো উপায় নেই। একইভাবে ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) সফটওয়্যার ব্যবহার করেও ফেসবুকসহ সব ধরনের নেটওয়ার্কে প্রবেশ সম্ভব।
বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেকে ফেসবুকে নানা রকম স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তবে তারা এসব স্ট্যাটাসে বাংলাদেশের কথা না বলে ভিন্ন ভিন্ন দেশে আছেন বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশে সব বয়সী মানুষের কাছে ফেসবুক অত্যন্ত জনপ্রিয়। বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে নেদারল্যান্ডস আর পিসিতে যুক্তরাষ্ট্রে আছি- ফেসবুকে একজনের দেয়া একজনের স্ট্যাটাস দেখেছেন খোদ বিটিআরসির কর্মকর্তারা। তবে বিটিআরসির বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কমেন্টে কেউ লিখেছেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রে, আবার কেউ লিখেছেন, আমি জার্মানিতে অথবা আমি জাপানে। বাস্তবে কমেন্টদাতারা সবাই-ই বাংলাদেশ থেকে নিজেদের ফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমেই ফেসবুক ব্যবহার করে এসব বক্তব্য দিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন তরুণ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জানান, তথ্য প্রযুক্তির এই সময়ে এসে লোকজনকে এতটা বোকা ভাবার কোনো কারণ নেই। তথ্যপ্রযুক্তি এখন কোন জায়গায় চলে গেছে সে সম্পর্কে সরকারের লোকজনের বোধহয় ধারণাই নেই। কারণ সরকার একদিকে এসব মাধ্যম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিচ্ছে, অন্যদিকে বিভিন্ন প্রযুক্তির সাহায্যে এগুলোর ব্যবহার যথারীতি চলছে।
তিনি আরও জানান, এখন এমন সব সফটওয়্যার আছে যা যে কেউ চাইলেই ইন্টারনেটে ডাউনলোড করে তার সাহায্যে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারেন। আর সেটাই করা হচ্ছে এখন। এর ফলে একজন ফেসবুকে ঢুকলেও বাংলাদেশের আইপি অ্যাড্রেস সেখানে দেখাবে না। দেখাবে অন্য কোনো দেশের অ্যাড্রেস। এ ধরনের প্রযুক্তিকে বলে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক বা ভিপিএন।
এছাড়া মোবাইল ফোন থেকেও বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রক্সি সাইট ব্যবহার করেও ফেসবুক ব্রাউজিং করছেন অনেকে। এমনই একজন বলছিলেন, তিনি নিজের মোবাইল ফোন থেকে বৃহস্পতিবার সারাদিন ফেসবুক ব্যবহার করেছেন।
Source