-নিজস্ব প্রতিবেদক
মোবাইল সিম পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়ায় প্রথম পর্যায়ে গ্রাহকরা ৬ মাস সময় পাচ্ছেন জানিয়েছে মোবাইলফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)। সংগঠনের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়, অনিবন্ধিত সিম সহসাই বন্ধ হওয়ার ‘সম্ভাবনা নেই’। তবে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ ছাড়া চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করবে সরকার।
গতকাল বুধবার গুলশানের অ্যামটব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মোবাইল সিম পুনঃনিবন্ধনের প্রক্রিয়াগুলো ?তুলে ধরেন সংগঠনের মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির।
ভুয়া পরিচয়ে অথবা নিবন্ধন না করে সিম কিনে নানা অপরাধে ব্যবহারের অভিযোগ বাড়তে থাকায় সম্প্রতি গ্রাহকদের তথ্য যাচাই ও সিম পুনঃনিবন্ধনের এই নির্দেশনা জারি করে সরকার।
টিআইএম নুরুল কবির বলেন, আগামী এক নভেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সব অপারেটরের পরীক্ষামূলকভাবে সিম পুনঃনিবন্ধন শুরু হবে। এ কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ১৬ ডিসেম্বর; প্রাথমিকভাবে ৬ মাস এ কার্যক্রম চলবে। এরপর কী হবে ছয় মাস পর তা ঠিক করা হবে বলে অ্যামটব মহাসচিব জানান। দেশের প্রায় ১৩ কোটি সিমের সবই এ প্রক্রিয়ার মধ্যে আসতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত সব সিম পুনঃনিবন্ধন না হয়, ততদিন এ প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, সব সিম পুনঃনিবন্ধনের জন্য আমাদের সব সম্পদ কাজে লাগাব। শেষ পর্যায় পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য পাওয়া না গেলে সিমগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। তবে পরবর্তী সময়ে আবার তথ্য দিয়ে এগুলো চালু করা যাবে। সিম পুনঃনিবন্ধনে গ্রাহকদের ভয়েস ও টেক্সট এসএমএস পাঠানো হবে জানিয়ে নুরুল কবির বলেন, এজন্য কোনো চার্জ প্রযোজ্য হবে না। আমরা গ্রাহকদের ভোগান্তিতে ফেলতে চাই না। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য নেই তাদের বলব জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে পুনরায় নিবন্ধন করতে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাস নাগাদ বাংলাদেশে ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটরের গ্রাহক সংখ্যা ১২ কোটি ৮৭ লাখ। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম দায়িত্ব নেয়ার পর সব সিম পুনঃনিবন্ধনের উদ্যোগ নেন। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১ নভেম্বর থেকে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলকভাবে এবং ১৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয়ভাবে পুনঃনিবন্ধন শুরু হবে। অপারেটরগুলোর আউটলেট ও সেন্টারে এই নিবন্ধন চলবে। অ্যামটব মহাসচিব বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে অনুমান করছি ছয় মাস সময় লাগবে। এরপর প্রতি মাসে রিভিউ করব। আর চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করে দেবে সরকার। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে সেক্ষেত্রে পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়ার জন্য গাইডলাইন পরিবর্তন করতে বিটিআরসির কাছে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান নুরুল কবির। এদিকে মোবাইল সিমকার্ড পুনঃনিবন্ধনের জন্য অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলো সিমের তথ্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) কর্তৃপক্ষের কাছে সরবরাহ শুরু করেছে। এ ব্যাপারে এনআইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অপারেটরদের চুক্তির জন্য একটি খসড়া প্রস্তুত হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যামটব।
সিমকার্ড পুনঃনিবন্ধনে গ্রাহকদের তথ্য বিভ্রান্তি দূর করতে ও সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে অপারেটরদের উদ্যোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে উল্লেখ করে অ্যামটব মহাসচিব বলেন, আগামী সপ্তাহে অপারেটরগুলো তাদের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেবে। এ ছাড়া ব্যাপক আকারে মিডিয়া কাভারেজ দেয়া হবে বলেও জানা গেছে।
এর আগেও ২০০৮ সালে একবার সিমকার্ড পুনঃনিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে অপারেটরদের কাছে সে সময় জাতীয় পরিচয়পত্র ডাটাবেইজের তথ্য যাচাই করার সুযোগ ছিল না। এজন্য সে উদ্যোগ সফল হয়নি। নতুন করে নেয়া সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে এ ব্যাপারে অপারেটরগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করবে বলে জানায় অ্যামটব। সংবাদ সম্মেলনে ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
Source