-এম. মিজানুর রহমান সোহেল
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১৬ ডিসেম্বর বহুল কাঙ্ক্ষিত ডট বাংলা ডোমেইন উন্মুক্ত হচ্ছে না। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন এবং ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে ট্যাব প্রদান অনুষ্ঠানের কারণে ১৬ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২১ ফেব্রুয়ারি উন্মুক্ত হচ্ছে ডট বাংলা ডোমেইন। মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো বিটিআরসি কার্যালয় পরিদর্শনে এসে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এসব কথা বলেছেন। জানা গেছে, ২০১১ সালে ডোমেইনটি ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়া গেলেও তত্ত্বাবধায়ক প্রতিষ্ঠান নিযুক্ত করতে না পারায় চার বছরেও এটি চালু করা সম্ভব হয়নি।
ফলে ডট বাংলা ডোমেইন বাতিল হয়েছে বলে গত জুন মাসে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। এরই প্রেক্ষাপটে ডট বাংলা ডোমেইন কার্যকর করতে সরকার উদ্যোগ নেয়। এরপর ওই মাসেই অনুষ্ঠিত ডোমেস্টিক নেটওয়ার্ক কো-অর্ডিনেশন কমিটির (ডিএনসিসি) সভায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডকে (বিটিসিএল) ডট বাংলার দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই ডোমেইনটির বর্তমান অবস্থা জানতে চেয়ে ডোমেইন নেম সিস্টেম পরিচালনাকারী সংস্থা ইন্টারনেট কর্পোরেশন ফর অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নাম্বারসকে (আইসিএএনএন) চিঠি দেয় বিটিসিএল। বিটিসিএলের চিঠির জবাবে ডোমেইনটি বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ রয়েছে বলে জানায় আইসিএএনএন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ডোমেইনটি চালুর লক্ষ্যে কাজ শুরু করে বিটিসিএল। প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ সংগ্রহ ও অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে আগামী ডিসেম্বর নাগাদ এটি চালু করার কথা বলা হয়েছিল। তবে তা শেষ পর্যন্ত ভাষার মাস ২১ ফেব্রুয়ারিতে হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম কান্ট্রি কোড টপ-লেভেল ডোমেইন (সিসি-টিএলডি) হল ডট বিডি। এরই মধ্যে এটি চালু করা হয়েছে। বিটিসিএল এ ডোমেইনের নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।
তবে রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণে ডট বিডি ডোমেইনের সেবা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে ব্যবহারকারীদের। দেশের দ্বিতীয় সিসি-টিএলডি হল ডট বাংলা। ২০১০ সালের ২১ ফেব্র“য়ারি সরকার ডট বাংলা ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আইসিএএনএনের কাছে আবেদন করে। বিটিআরসির পক্ষে সংস্থাটির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক রেজাউল কাদের এ আবেদন করেন। পরের বছরের ৩০ মার্চ এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পায় বাংলাদেশ।
বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে তাদের নিজস্ব ভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে ডোমেইন নেম নিবন্ধন শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে ব্রাউজারের অ্যাড্রেসবারে প্রচলিত ইংরেজি ভাষায় লেখা ডোমেইনের পরিবর্তে নির্দিষ্ট ভাষায় লেখা ডোমেইন ব্যবহার করা যায়। পুরো ডোমেইন নেম সিস্টেম মূলত এএসসিআইআই ক্যারেক্টার সেটের ওপর নির্ভর করে, যেটা ইংরেজি বর্ণমালার সঙ্গে কিছু বিশেষ ক্যারেক্টার মিলিয়ে শুধু ১২৮টি ক্যারেক্টার এনকোড করতে পারে। ফলে ডোমেইন নাম হিসেবে অন্য কোনো ভাষার কোনো বর্ণমালা বা শব্দ ব্যবহার করা যায় না। এ সমস্যা সমাধানে আইসিএএনএন ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেম ইন অ্যাপ্লিকেশনস (আইডিএনএ) নামে একটি পদ্ধতি চালু করে। এটি ইউনিকোড ক্যারেক্টার সেট সমর্থন করে, যাতে এএসসিআইআইসহ ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি ক্যারেক্টার রয়েছে। আর ইউনিকোড স্ট্রিংগুলো পুনি কোড নামে একটি এনকোডিংয়ের মাধ্যমে বৈধ ডিএনএস ক্যারেক্টার সেট বা এএসসিআইআই ক্যারেক্টার সেটে পরিণত হয়। সাধারণ ডোমেইন নামে শুধু ইংরেজি বর্ণমালার বর্ণগুলো ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে একটি নির্দিষ্ট ভাষার বিভিন্ন বর্ণ নিয়ে গঠিত হয় ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেম। ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নামগুলো পুনি কোড এনকোডিং ব্যবস্থার মাধ্যমে অ্যাসকি স্ট্রিং হিসেবে ডোমেইন নেম সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত থাকে।
Source