-স্টাফ রিপোর্টার :
ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি সাইবার বুলিং (ভয় বা হুমকির বার্তা) এর শিকার অথবা ইন্টারনেটে উত্ত্যক্তকারীদের অশোভন বার্তা পেয়েছে। ছাত্রীদের চেয়ে ছাত্রদের কাছে এ ধরনের বার্তা বেশি এসেছে। আর ছাত্রীরা এমন সব বার্তা পেয়েছে যেখানে অচেনা ব্যক্তিকে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য দিতে বলা হয়েছে। ইন্টারনেটের এই অপব্যবহার শিক্ষার্থীদেরকে খুবই অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দেয়। শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে তাদের বাবা-মা ও শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করার চেয়ে বেশিরভাগ সময়ই তাদের বন্ধুদের সাথে আলোচনা করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সম্প্রতি গ্রামীণফোন পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য পাওয়া যায়। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার ও এর ধারণাকে বুঝে ওঠার জন্য একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে গ্রামীণফোন। ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ থাকা ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সী গ্রাম ও শহর অঞ্চলের ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে এ গবেষণাটি পরিচালিত হয়। এ গবেষণা গ্রামীণফোনকে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকে নিরাপদ করতে সহায়তা করবে। ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে উন্নয়নের একটি চালিকা শক্তি দেখা হয়, তাই ইন্টারনেটে তরুণদের নিরাপদ রাখাটা খুবই জরুরী যাতে তারা নিজেদের অবস্থার উন্নয়নে ইন্টারনেটকে পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারে। গবেষণায় অংশ নেয়া ৭০ শতাংশ অংশগ্রহণকারীই এ ধরনের ঘটনায় তাদের ভাই-বোন ও বন্ধুদের সাহায্য করতে চান। ৭০ শতাংশের বেশি জানায়, তাদের শিক্ষক ও বিদ্যালয় সাইবার অপরাধ প্রতিহত করতে ও এ সংক্রান্ত বার্তা ছড়িয়ে দিতে সমর্থ নয়। দেশের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীই মনে করে ইন্টারনেট ব্যবহারে কোন সমস্যায় পড়লে তাদের সাহায্য বা দিক নির্দেশনা দেয়ার কেউ নাই। কারণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বা অভিভাবকগণ এ বিষয়ে যথেষ্ট সক্ষম নন। এজন্য শিশু-কিশোরদের ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়ে অভিভাবকদের আরো খোলামেলা এবং সচেতন হওয়ার কথাও বলা হয়েছে। গ্রামীণফোনের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীণফোন বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের জীবন উন্নত করতে এবং একই সাথে সেখানে নিরাপদে থাকতে সহায়তা করতে উৎসাহী।’ গ্রামীণফোনের হেড অফ কর্পোরেট রেসপনসিবিরিটি দেবাশীষ রায় বলেন, আমাদের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল কেননা বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ৫ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৮৫ শতাংশই তরুণ। এর মানে, বাকি বিশ্বের সাথে সমান অগ্রসরমানতায় আমরা ভবিষ্যতের দিকে আগাচ্ছি। অন্যভাবে, উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই সাইবার অপরাধ বিষয়ে সঠিকভাবে অবগত নয়। তারা জানে না কিভাবে একে প্রতিহত করতে হয়। সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গ্রামীণফোন এর ‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ প্রয়াসের অধীনে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নিরাপদ ইন্টারনেট নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। এছাড়াও, প্রতিষ্ঠানটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছে। সম্প্রতি, প্রতিষ্ঠানটি অভিভাবকদের জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট গাইডবই প্রকাশ করেছে। এই গাইডবইটি এখন এ সংক্রান্ত একটি লিফলেট এর সাথে দেশজুড়ে বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও দেশজুড়ে ৫০০ বিদ্যালয়ে ব্র্যাকের সহযোগিতায় নিরাপদ ইন্টারনেট কর্মশালা পরিচালনা করা হচ্ছে।
Source