-keranigonj24
দেশের সবচেয়ে বড় হ্যান্ডসেট ব্র্যান্ড সিম্ফনি আগামী বছরেই মোবাইল অ্যাসেম্বলিংয়ে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ পরিচালক রেজওয়ানুল হকের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি মোবাইল আমদানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইম্পোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমপিআইএ) সাধারণ সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করছেন। তাই সাক্ষাৎকারে দেশের সার্বিক মোবাইল হ্যান্ডসেটের বিষয়েও কথা বলেছেন তিনি। বাংলাদেশে বর্তমান মোবাইল মার্কেটের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে মোট মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি হয়েছে ২ কোটি ৪০ লাখ। এ বছর প্রথমটা খারাপ হয়েছিল। জানুয়ারি থেকে আমাদের মোবাইল ফোনের আমদানি একটু কমলেও পরে তা আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট আমদানি হয়েছে ১৪ লাখ। এরপর মে মাস পর্যন্ত ১৪ থেকে ১৭ লাখের মধ্যে ওঠানামা করেছে।
গত জুন-জুলাই মাসে এসে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ লাখে। কিন্তু এখন যেভাবে গ্রোথ বাড়ছে তাতে আমরা বুঝতে পারছি ২০১৫ সালের শেষে গিয়ে এ সংখ্যা হবে ২ কোটি ৬০ লাখ। কিন্তু আপনি যদি দেখেন ২০১৩ সালে ২ কোটি ২০ লাখ হ্যান্ডসেট আমদানি হয়েছিল। সেটার গ্রোথ ছিল ৩৫ শতাংশ। ২০১৪ সালে সেটার গ্রোথ ছিল ৯ শতাংশ। এ বছর আশা করছি ভালো একটি গ্রোথ হবে। দেশে স্মার্টফোন ও ফিচার ফোনের তুলনামূলক অবস্থান সম্পর্কে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে স্মার্টফোন ও ফিচার ফোনের চিত্র যদি বলি ২০১২ সালে স্মার্টফোনের মার্কেট ছিল ৩ শতাংশ এবং ফিচার ফোনের মার্কেট ছিল ৯৭ শতাংশ, ২০১৩ সালে স্মার্টফোনের মার্কেট ছিল ৭ শতাংশ এবং ফিচার ফোনের মার্কেট ছিল ৯৩ শতাংশ, ২০১৪ সালে স্মার্টফোনের মার্কেট ছিল ১৭ শতাংশ এবং ফিচার ফোনের মার্কেট ছিল ৮৩ শতাংশ, ২০১৫ সালে এসে স্মার্টফোনের মার্কেট হয়েছে ২২ শতাংশ এবং ফিচার ফোনের মার্কেট ৭৮ শতাংশ। দেশে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের মোবাইল মার্কেটের মধ্যে কারা এগিয়ে আছে? উত্তরে রেজওয়ানুল হক জানান, এখানে আন্তর্জাতিক মার্কেটের চেয়ে স্থানীয় মার্কেট এটিকে ডোমিনেট করছে। কারণ এখানে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড অ্যাপল, স্যামসাংসহ অন্যান্য ব্র্যান্ডের ডোমিনেশন খুব কম। ২০১৫-১৬ যদি ধরেন তাহলে বাংলাদেশের মার্কেটে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কন্ট্রিবিউশন হচ্ছে ১৭ শতাংশ। আর ৮৩ শতাংশ হচ্ছে লোকাল ব্র্যান্ডের। একই সঙ্গে তিনি নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মার্কেট শেয়ার সম্পর্কে বলেন, ২০১৩ সালে আমরা বিক্রি করেছি ১৬ লাখ স্মার্টফোন, ২০১৪ সালে আমরা বিক্রি করেছি ৪০ লাখ স্মার্টফোন আর ২০১৫ সালে সেটা হবে ৬৩ লাখ। আমরা এ বছর সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ লাখ স্মার্টফোন বিক্রি করব। এখানে যদি দেখেন আমার (সিম্ফনি) স্মার্টফোনের মার্কেট ৫৫ শতাংশ এবং ফিচার ফোনের মার্কেট ৩৫ শতাংশ। কারণ ফিচার ফোন গ্রে মার্কেট দিয়ে সবচেয়ে বেশি আসে। কোন ধরনের হ্যান্ডসেট মার্কেটে বেশি বিক্রি হচ্ছে? উত্তরে বলেন, ৩ হাজার টাকার নিচে মোবাইল ফোনের মার্কেট শেয়ার সব মিলিয়ে প্রায় ৮০ শতাংশ। আর বাকি ২০ শতাংশ হচ্ছে সব মোবাইল ফোনের ব্যবসা।
বাংলাদেশে মোবাইল ম্যানুফেকচারিং সম্ভব কিনা? উত্তরে রেজওয়ানুল হক বলেন, বাংলাদেশে এ বছর ২ কোটি ৬০ লাখ মোবাইল ইম্পোর্ট হয়েছে। আর সেখানে প্রতিবেশী দেশ ভারতে এ বছর এসেছে ২৬ কোটি হ্যান্ডসেট। তাদের এত বেশি চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আপনি দেখুন সেখানে প্রোডাকশন লেবেল কত হয়েছে? বা তারা প্রোডাকশন লেবেলে যেতে পেরেছে কিনা? সেখানে তারা মাত্র ৭ শতাংশ প্রোডাকশনে যেতে পেরেছে। এখন ভারত সরকার মোবাইল ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেক ধরনের সহযোগিতাও দিচ্ছে। সেখানে ২৬ কোটির মার্কেট অনেক বড়। সেই কম্পেয়ার করলে বাংলাদেশ সরকারও এখন এসব বিষয়ে কথা বলতে শুরু করেছে। আমার জানা নেই; প্রোডাকশন করতে গেলে সরকার আমাকে কত শতাংশ বেনিফিট দেবে? এখনও কিন্তু আমার ট্যাক্স ২৪ শতাংশের ওপরে। তাহলে আমি যদি এখন প্রোডাকশন করি তাহলে ট্যাক্স বেনিফিট পার্সেন্টিজ কত? এখনও কিন্তু আমাদের দেশে ফাইনালি এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
সুতরাং ওই বেনিফিটটা প্রকাশ্যে না আশা পর্যন্ত প্রোডাকশন হবে না। তবে আমরা এখন প্রস্তুতি নিচ্ছি আগামী বছরের মধ্যে অ্যাসেম্বলিংয়ে চলে যাব। আমার জানা মতে, এ সময়ের মধ্যে অনেক কোম্পানিই অ্যাসেম্বলিং করবে। আমার কাছে অ্যাসেম্বলিংটা মনে হচ্ছে খুব সহজেই বাংলাদেশে শুরু হবে। আর আমাদের প্রোডাকশনে যেতে আরও ২-৩ বছর সময় লাগবে।
Source