খবরের শিরোনামঃ মন্ত্রণালয়কে এড়িয়ে আন্তর্জাতিক কল রেট বাড়াল বিটিসিএল

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১২-০৪

-আশরাফুল ইসলাম
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে এড়িয়ে আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট বাড়িয়েছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। আন্তর্জাতিক গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) অপারেটর হিসেবে এত দিন দেড় সেন্টে কল আনলেও ১ ডিসেম্বর থেকে দুই সেন্টে দেশে কল আনতে শুরু করেছে বিটিসিএল। তবে বিটিসিএলের বাড়তি রেটে কল আনার এ বিষয়টি মন্ত্রণালয় জানে না বলে গতকাল প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, ‘বিটিসিএলের কল রেট বাড়ানোর কোনো ফাইল আমার কাছে আসেনি। সচিব তো এখন বিদেশে আছেন, আমাকে না জানিয়ে বিটিসিএল কার অনুমতি নিয়ে কল রেট বাড়াল, সেটা তাদেরই জিজ্ঞেস করেন।’ জানতে চাইলে বিটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ কল রেট বাড়ানো হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, ডাক ও টেলিযোগাযোগসচিব পদাধিকারবলে বিটিসিএলের বোর্ডের প্রধান, বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের না জানার কোেনা কারণ নেই। বিটিসিএল কল রেট বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত এমন সময়ে নিল যখন বিদেশ থেকে আসা আন্তর্জাতিক কলের সর্বোচ্চ সীমা (সিলিং রেট) ১ দশমিক ৭ সেন্ট বেঁধে দেওয়ার একটি প্রস্তাব সরকার বিবেচনা করছে। সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে বিটিসিএলসহ দেশের ২৩টি আইজিডব্লিউ এখনকার মতো দুই সেন্টে আর বিদেশি কল আনতে পারবে না। বেসরকারি আইজিডব্লিউগুলো গত ২৪ আগস্ট থেকে দুই সেন্টে আন্তর্জাতিক কল আনছে। বেসরকারি ২২টি আইজিডব্লিউর মতো দুই সেন্টে নাকি আগের দেড় সেন্টে কল আনবে, সে বিষয়ে জানতে চেয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) ওই সময়েই একটি চিঠি দেয় বিটিসিএল। চিঠির জবাবে বিটিআরসি জানায়, দুই সেন্টে কল আনলে কোনো সমস্যা নেই। জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর যেখানে বিটিসিএলের মাধ্যমে ১ কোটি ৯০ লাখ মিনিট কল এসেছে, সেখানে গতকাল তা ৯০ লাখ মিনিটে নেমে এসেছে। অর্থাৎ কল রেট বাড়ানোর পর বিটিসিএলের কলসংখ্যা তিন দিনেই এক কোটি মিনিট কমেছে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক কল রেটের সর্বনিম্ন সীমা (ফ্লোর রেট) তিন সেন্ট থেকে কমিয়ে দেড় সেন্ট করা হয়। ওই সময় সর্বনিম্ন রেট অর্থাৎ দেড় সেন্টেই রাজস্ব ভাগাভাগির নিয়ম রেখে আন্তর্জাতিক কল আনার নতুন পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। কল টার্মিনেশন রেট যখন তিন সেন্ট ছিল, তখন কল রেট বাড়ানোর সর্বোচ্চ সীমা (সিলিং রেট) ছিল সাড়ে তিন সেন্ট। কিন্তু পরে কল রেট কমিয়ে দেড় সেন্ট করার সময় আর সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। কল রেটের সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে না দেওয়ার এ সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয় করছে আইজিডব্লিউ অপারেটররা।

Source