খবরের শিরোনামঃ মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহক ও লেনদেন কমেছে আগস্টে

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১০-০১

-
আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১২ হাজার ৮৪২ কোটি টাকার লেনদেন হয়; যা জুলাইয়ে ছিল প্রায় ১৩ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। জুলাইয়ে দৈনিক গড়ে ৪৬০ কোটি টাকা লেনদেন হলেও আগস্টে কমে দাঁড়ায় ৪২৮ কোটি টাকা। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় প্রায় পৌনে পাঁচ লাখ গ্রাহক কমে গেছে। গত জুলাই মাসে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা ছিল ২ কোটি ৮৭ লাখ ৩২ হাজার। আর আগস্টে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৮২ লাখ ৫৭ হাজারে। একই সঙ্গে লেনদেনে সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যাও কমেছে প্রায় সাড়ে ২৩ লাখ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী গত জুলাই মাসে সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৯ লাখ ২৩ হাজার। আর আগস্টে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯৬ লাখে। সাধারণত যেসব হিসাবে একটানা তিন মাসের বেশি লেনদেন হয় না, সেসব হিসাবকে নিষ্ক্রিয় হিসাব বলে ধরা হয়। আর অন্ততপক্ষে তিন মাসের মধ্যে একবার লেনদেন করেছেন-এমন হিসাবকে সক্রিয় হিসাব বলে ধরা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হিসাব খোলা ও হিসাব সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপের ফলে গ্রাহকসংখ্যা কিছুটা কমে থাকতে পারে। তাদের মতে, গ্রাহকসংখ্যা বাড়ানোর চেয়ে এখন সঠিক গ্রাহক ও লেনদেনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়া, জুলাই মাসে ঈদুল ফিতরের কারণেও সক্রিয় ও নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা বেড়েছিল। ওই সময় অনেকে প্রিয়জনকে টাকা পাঠাতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার আওতায় এসেছিলেন। কিন্তু আগস্টে ওই ধরনের ধর্মীয় উৎসব না থাকায় গ্রাহকসংখ্যা এবং লেনদেন কমেছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে সমপ্রতি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হিসাব খোলার ক্ষেত্রে গ্রাহকের সঠিক পরিচয়সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিশ্চিত হওয়ার কঠোর নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই নির্দেশনার পর মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে ব্যাংকিং প্রতিনিধি বা এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দেয়; যাতে গ্রাহক সম্পর্কে সঠিক তথ্য নিশ্চিত না হয়ে কোন হিসাব খোলা না হয়। পাশাপাশি পুরনো গ্রাহকদের সঠিক পরিচয়সহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাইয়ের কাজ শুরু করে। এর ফলে একদিকে নতুন হিসাব খোলা যেমন কিছুটা কমেছে, তেমনি পুরনো কিছু হিসাবও বন্ধ হয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত আগস্টে গ্রাহক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। ওই মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১২ হাজার ৮৪২ কোটি টাকার লেনদেন হয়; জুলাই মাসে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ১৩ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। জুলাইয়ে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৬০ কোটি টাকা। আর আগস্টে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪২৮ কোটি টাকায়। সেই হিসাবে মাসিক ও দৈনিক লেনদেন ৭ শতাংশ কমে গেছে। এদিকে গ্রাহক ও লেনদেন কমলেও বেড়েছে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিনিধি বা এজেন্ট। জুলাইয়ের চেয়ে আগস্টে এজেন্টের সংখ্যা ২,১৬৭ জন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৩,৮৯৮ জনে। বর্তমানে ২৮টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে ২০টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। প্রচলিত ব্যবস্থায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ স্থানান্তর বা লেনদেন ছাড়াও প্রবাসী-আয়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সেবামাশুল (ইউটিলিটি বিল) পরিশোধসহ নানা ধরনের লেনদেন হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে আড়াই কোটি টাকা প্রবাসী-আয় লেনদেন হয় এ সেবার মাধ্যমে। এছাড়া, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১১৯ কোটি টাকা বেতন ও প্রায় ১১৮ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সেবামাশুল লেনদেন হয়।

Source