খবরের শিরোনামঃ পাঁচ বছরে এসএমএসের ব্যবহার বেড়েছে ৪০ গুণ

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১২-০৩

-সুমন আফসার
দেশে গত পাঁচ বছরে সেলফোনের গ্রাহক বেড়েছে পাঁচ কোটিরও বেশি। এ সময়ের মধ্যেই চালু হয়েছে ডাটাভিত্তিক থ্রিজি সেবা। এতে এসএমএসের ব্যবহার কমে যাবে বলে আশঙ্কা করেছিলেন খাতসংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বাস্তবে সেবাটির ব্যবহার তো কমেইনি, বরং পাঁচ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৪০ গুণ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সেলফোন অপারেটরদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাসভিত্তিক অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক এসএমএসের হিসাব করে বিটিআরসি। সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, ২০১১ সালের জুলাইয়ে গ্রাহকের পাঠানো অভ্যন্তরীণ এসএমএসের সংখ্যা ছিল তিন কোটির কিছু বেশি। এ সময় দেশে সেলফোনের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৮০ লাখ। পরের বছর জুলাইয়ে এসএমএসের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় চার কোটির বেশি। চলতি বছরের জুনে দেশের সব সেলফোন গ্রাহকের পাঠানো এসএমএসের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২০ কোটির বেশি। এ হিসাবে গত পাঁচ বছরে এসএমএসের সংখ্যা বেড়েছে ৪০ গুণ। অন্যদিকে ২০১১ সালের জুলাইয়ে সেলফোন গ্রাহকদের গ্রহণ করা এসএমএসের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ কোটি ৪৬ লাখ। ২০১২ সালের জুনে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ কোটি ২৫ লাখে। আর চলতি বছরের জুনে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটি ৩৮ লাখ। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুলাই শেষে দেশে সেলফোনের গ্রাহক ১২ কোটি ৬৮ লাখ ছাড়ায়। আর অক্টোবর শেষে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৩ কোটি ২০ লাখ। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক বছরে সেলফোনের গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে অনেক। পাশাপাশি সেলফোনের নানামুখী ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে গ্রাহক; যা এসএমএসের ব্যবহার বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে। এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পণ্য ও সেবার বিপণনে এসএমএসভিত্তিক প্রচারণা জনপ্রিয় হয়েছে উঠেছে। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্যতম এ মাধ্যমের ক্ষেত্রে মূলত নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের ভিত্তিতে অপারেটরের কাছ থেকে নেয়া শর্টকোড অথবা নির্দিষ্ট পোর্ট ব্যবহার করা হয়। তবে অনেকেই এ ধরনের প্রচারণার কাজে নির্দিষ্ট সেলফোন নম্বর ব্যবহার করে। এটির কারণেও এসএমএসের ব্যবহার বাড়ছে বলে মনে করেন তারা। সেলফোন অপারেটররা তিন ধরনের তথ্যের বিষয়ে গ্রাহকদের এসএমএস পাঠিয়ে থাকে। প্রথমত. সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহককে জানানো হয়। সেলফোন অপারেটরদের নিজেদের বিভিন্ন পণ্য ও সেবার নতুন নতুন অফার সম্পর্কে গ্রাহকদের জানাতেও পাঠানো হয় এসএমএস। আর প্যাকেজের কোনো ধরনের পরিবর্তন বা সেবা বিঘ্নের মতো কিছু বিষয় এসএমএসের মাধ্যমে গ্রাহককে জানায় সংশ্লিষ্ট অপারেটর। সেলফোন অপারেটরদের সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের নতুন অফার এবং পণ্যের প্রচারণা সম্পর্কে জানাতে এসএমএস ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে নতুন সেবা ও এর মূল্য সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য পেয়ে থাকেন গ্রাহক। গ্রাহকদের কাছে নতুন নতুন সেবা পৌঁছে দিতে এসএমএস একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। সেবার সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানাতেও এসএমএস ব্যবহার করা হয়। এদিকে দেশের গ্রাহকের পাঠানো আন্তর্জাতিক এসএমএসের সংখ্যায় গত পাঁচ বছরে বড় ধরনের পরিবর্তন আসেনি। কমিশনের তথ্যমতে, চলতি বছরের জুনে দেশের গ্রাহকের পাঠানো আন্তর্জাতিক এসএমএসের সংখ্যা ছিল প্রায় ৮২ লাখ। তবে আগের দুই মাসে এ সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখের বেশি। ২০১১ সালের জুলাইয়ে এ সংখ্যা ছিল এক কোটির কিছু বেশি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ভয়েস কলের মতোই জনপ্রিয় এসএমএস সেবা। তবে দেশে মূলত ভয়েস কলের ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে অধিকাংশ গ্রাহক। নিয়েলসন মিডিয়া অ্যান্ড ডেমোগ্রাফিক সার্ভের তথ্যমতে, যেসব দেশে শিক্ষার হার কম, সেখানে সেলফোন গ্রাহকদের মধ্যে এসএমএস পাঠানোর প্রতি আগ্রহ কম থাকে। এসব গ্রাহক ফোনে কথা বলতেই বেশি আগ্রহী হয়।

Source