খবরের শিরোনামঃ গ্রামীণফোনের উদ্যোগে ডিজিটাল মার্কেটিং সামিট অনুষ্ঠিত

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১২-০৯

-ঢাকা:
ঢাকায় দ্বিতীয়বারের মতো আজ শনিবার ‘ডিজিটাল মার্কেটিং সামিট ২০১৫’ বা ‘অনলাইন বিপণন সম্মেলন-২০১৫’ (ডিএমএস) অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশে অনলাইনে পণ্য ও সেবা বিপণন তথা কেনাবেচা কার্যক্রম নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিমিয় ও তা চর্চা এবং জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে সম্মেলনটির আয়োজন করা হয়। মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম (বিবিএফ) দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে পাঁচটি অধিবেশনে ডিজিটাল মার্কেটিং বা অনলাইন বিপণন বিশেষজ্ঞরা মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এর পাশাপাশি দুটি ইনসাইট প্যানেল ডিসকাশন বা চিন্তাশীল আলোচনা পর্ব এবং তিনটি ডিপ-ডাইভ বা বিশেষ আলোচনা অধিবেশন, ডিজিটাল এক্সপো বা অনলাইন বিপণন প্রদর্শনী এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন ছিল। রাজধানী ঢাকায় জিপি হাউসে আয়োজিত এই ডিজিটাল সম্মেলনে দেশের ৩৫০ জন মার্কেটিং প্রফেশনাল বা বিপণন পেশাজীবী অংশ নেন। গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার ইয়াসির আজমানের স্বাগত বক্তব্যের মধ্যদিয়ে সম্মেলন শুরু হয়। তিনি তাঁর বক্তব্যে কীভাবে ডিজিটাল পদ্ধতি বা তথ্যপ্রযুক্তি নতুন ব্যবসা সৃষ্টির সুযোগ তৈরি করে, গতানুগতিক পদ্ধতির পরিবর্তে নতুন উপায়ে কাস্টমার বা গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগের শক্তিশালী পথ দেখিয়ে দেয় এবং দুই পক্ষকেই এক জায়গায় নিয়ে আসে ইত্যাদি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে গ্রামীণফোন সব সময়ই যোগাযোগ, বিনোদন, স্টোরেজ, লাইফস্টাইল বা জীবনযাত্রার ধরন এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি খাত সংক্রান্ত নিত্যনতুন ও আনষঙ্গিক ডিজিটাল সেবা নিয়ে আসার ব্যাপারে জোর দিয়ে থাকে ও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়।’’ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের (বিবিএফ) প্রতিষ্ঠাতা ও এডিটর বা সম্পাদক শরিফুল ইসলাম সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের ডিজিটাল মার্কেটিং বা অনলাইন বিপণন সংক্রান্ত কার্যক্রমে বেশি বেশি করে সম্পৃক্ত হওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জনসংখ্যার অধিকাংশই বয়সে অত্যন্ত তরুণ হওয়ায় এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে তাঁদের ব্যাপক আগ্রহ থাকায় এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং বা অনলাইন বিপণনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।’’ শরিফুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে দেশে অনলাইন বিপণন কার্যক্রম সাম্প্রতিককালে অর্জিত অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন। সম্মেলনে প্রথম মূল প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন এসএসডি-টেকের চিফ অব মার্কেটিং অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি বা বিপণন ও কৌশল প্রধান আশিস থমাস। তাঁর প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল ‘ফরচুন অ্যাট দ্য বটাম অব দ্য পিরামিড-ট্রান্সলেটিং ‘‘ডিজিটাল’’ ফর বাংলাদেশ’। এতে আাশিস থমাস দেশের নি¤œপর্যায়ের আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডে ডিজিটাল অ্যাক্টিভিটিজ বা অনলাইন কার্যক্রমে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা এবং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন। বর্তমান বিশ্বের ভার্চুয়াল জগতে মোবাইল অ্যাপস যে খুবই জনপ্রিয় তা উঠে আসে টেলিনরের ডিজিটাল ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজার ক্যারি চেন-এর উপস্থাপিত প্রবন্ধে। এতে তিনি অ্যাপস মার্কেটিং বা বিপণন সম্পর্কে তাঁর বর্ণাঢ্য অভিজ্ঞতার কথা জানান। রবোসফট টেকনোলজিসের করপোরেট কমিউনিকেশন্সের ভাইস প্রেডিসডেন্ট (ভিপি) লক্ষ্মীপাঠে ভাট তাঁর ‘নিউ অ্যাডভার্টাইজিং ইজ ওল্ড অ্যাডভার্টাইজিং অ্যাট হার্ট’ শিরোনামের প্রবন্ধে ডিজিটাল বা অনলাইন বিপণনে ব্র্যান্ডিংয়ের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। আমাজন ইন্টারনেট সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের সলিউশন্স আর্কিটেক্ট অমিত শর্মা তাঁর প্রতিষ্ঠানের (আমাজন) অনলাইন বিপণন কার্যক্রম তুলে ধরার পাশাপাশি কীভাবে বড় ধরনের, কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে অবকাঠামো ও সেবার সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হয় তা নিয়ে কথা বলেন। এসব অধিবেশনের প্রত্যেকটিতেই মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পরে তার ওপর প্যানেল আলোচক ও অংশগ্রহণকারীরা আলোচনা করেন। এদিকে যাঁরা মাঠ পর্যায়ে বা হাতে-কলমে ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে কাজ করেন বা করতে আগ্রহী তাঁদের জন্য এই সম্মেলনে তিনটি ‘ডিপ ডাইভ সেশন’ বা আলাদা আলোচনা অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। এসব ‘ডিপ ডাইভ সেশন’ বা অধিবেশনগুলো পরিচালন করে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল মার্কেটিং ও সোশ্যাল মিডিয়া এজেন্সি ওয়েবেবল ডিজিটাল এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে নানা ধরনের পণ্য বিপণনকারী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এসএসডি টেক। এ ছাড়াও সম্মেলনে তিনটি বিশেষ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশন দুটিতে ডিজিটাল ইকো-সিস্টেমের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ এবং কীভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং বা অনলাইন বিপণন কার্যক্রমকে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়। এই পর্বে দেশের ডিজিটাল ও বিপণন জগতের বিশেষজ্ঞরা প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘গো ফর নলেজ’ শীর্ষক একটি বিশেষ নলেজ সেশনের আয়োজন করে গ্রামীণফোন। এই অধিবেশনে দেশের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত ‘ডিজিটাল মার্কেটিং সামিট ২০১৫’ শীর্ষক এই সম্মেলনে পৃষ্ঠপোষকতা করে এসএসডি-টেক। সম্মেলনটি আয়োজনে আরো সহায়তা করেছে সিম্ফনি। এতে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি নলেজ পার্টনার, দ্য ডেইলি স্টার ইয়ুথ এনগেজমেন্ট পার্টনার হয়েছে। টিভি পার্টনার হয়েছে একাত্তর টিভি, ম্যাভেরিক হয়েছে ডিজিটাল কনটেন্ট পার্টনার, সোশ্যাল মিডিয়া পার্টনার হয়েছে ওয়েবেবল এবং মাস্টহেড পিআর হয়েছে পিআর পার্টনার। যাঁরা আগে রেজিট্রেশন বা নিবন্ধন করেছিলেন তাঁরাই কেবল সম্মেলনটিতে যোগ দিয়েছেন।

Source