-এম. মিজানুর রহমান সোহেল
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিপিও সামিট ২০১৫ শুরু হচ্ছে আজ বুধবার থেকে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্য) যৌথ উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী এই সামিট অনুষ্ঠিত হবে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে। আজ সকাল ১০টায় বিপিও সামিট ২০১৫ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ব্যবসায় পরিচালনা, উন্নয়ন ও বিনিয়োগে বিশ্বের আদর্শ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ব্রান্ডিংয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) সম্মেলন। ‘ভিশন ২০২১’ বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে থাকা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়ন যে বিশ্বের বড় বড় কর্পোরেট ও ব্যক্তিমালিকানার প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা, গ্রাহকসেবা এবং ব্যবসায়িক স্থাপনার জন্য প্রস্তুত- তারই দৃশ্যায়ন হবে এ সম্মেলনে। বিপিও সামিট ২০১৫-এর বিস্তারিত জানাতে সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিস) অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আগামী দিনের বিপিও খাতকে তরুণদের মাঝে তুলে ধরার জন্য দু’দিনের এই আয়োজনে রয়েছে তরুণদের জন্য বেশ কিছু কর্মসূচি। সারা দেশে ৫৫৪টি বিপিও সেন্টার স্থাপন করা হবে। প্রতি বছর বাংলাদেশে ২ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা শেষ করে। এদের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য অংশকে বিপিও খাতে কাজ করার উপযোগী করতে সরকার উচ্চতর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে বলে জানান তিনি। তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শ্যামসুন্দর শিকদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকার তথ্যপ্রযুক্তিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তরুণ ও বেকারদের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে আরও স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিপিও সামিটে তরুণদের এই সেক্টর সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা দিতে সক্ষম হবে। বিপিও সেক্টরে সারা বিশ্বের ৫০০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ভারত ৮০ বিলিয়ন, ফিলিপিন্স ১৬ বিলিয়ন এবং শ্রীলংকা ২ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। বর্তমানে বাংলাদেশও দিন দিন এই খাতে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৩০ মিলিয়ন ডলারে বিপিও সেক্টরে কাজ করছে। বাংলাদেশে বিপিও খাতে ভালো করা বা এগিয়ে যাওয়ার বিপুল সম্ভাবনা আছে। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে কাজ করার খরচ তুলনামূলক অনেক কম। সরকার ও বেসরকারি খাতে এই খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কিন্তু এখন বাংলাদেশ এই খাতে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় পিছিয়ে আছে। বর্তমানে বাংলাদেশে মাত্র ২৫ হাজার লোক এই সেক্টরে যুক্ত আছে। সম্মেলনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতনামা ৪০ জনেরও বেশি বক্তা বিভিন্ন সেশনে স্পিকার থাকবেন। স্পিকারদের মধ্যে রয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্টসের সিইও ফায়েজুল চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট আবদুল মাতলুব আহমাদ, অস্ট্রেলিয়ান বিপিও অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্টিন এন কনবয়, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশনের (অ্যাসোসিও) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ এইচ কাফী, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ইনফোসিসের এমডি ও সিইও ড. বিশাল সিক্কা, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার, বেসিস সভাপতি শামীম আহসান, মাইক্রোসফটের এমডি এবং টাই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সোনিয়া বশির কবির, আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ও টেকনোলজি ব্যবসায় বিশেষজ্ঞ স্যানটিয়াগো গুটায়ারেজ, ডাটাবেইজ মার্কেটিং এবং কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজমেন্ট সলিউশন বিশেষজ্ঞ রাজমোহন ভি, বিনোদ হ্যামপাপুর র্যাঙ্গাদোর, শ্রী দয়া খালসা। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায় সেক্টরের অনেক বিশেষজ্ঞরাও এ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।
Source