খবরের শিরোনামঃ ২০২১ সালের মধ্যে কর্মসংস্থান হবে দুই লাখ: সজীব ওয়াজেদ জয়

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১২-১০

-নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বর্তমানে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বিপিও) খাতে ২৫ হাজার মানুষ কাজ করছে। ২০২১ সালের মধ্যে খাতটিতে ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এ খাতে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আয় যত বাড়বে, দেশ অর্থনৈতিকভাবে ততই এগিয়ে যাবে। কারণ প্রতিটি কর্মসংস্থান সমাজে বহুগুণীতক (মাল্টিপ্লায়ার) ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। গতকাল রাজধানীতে প্রথম ‘বিপিও সামিট ২০১৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করেছে আইসিটি বিভাগ ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং (বাক্য)। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্সের (উইটসা) সভাপতি স্যান্টিয়াগো গুটিয়েরেজ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইমরান আহমেদ, আইসিটি বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহ্মাদ, বাক্যর সভাপতি আহমেদুল হক। সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। বর্তমানে দেশের ৭০-৮০ শতাংশ সরকারি সেবা ডিজিটালাইজড হয়েছে। মানুষ সহজেই এসব সেবা গ্রহণ করতে পারছে। তিনি জানান, ২০০৯ সালে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয় ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। ছয় বছরের মধ্যে এ খাতে আয় ৩০০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি আমরা। আগামীতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের রফতানি দেশের মোট রফতানিকে ছাড়িয়ে যাওয়ারও সুযোগ রয়েছে। এজন্য তরুণদের উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিয়ে তথ্য-প্রযুক্তির বিভিন্ন খাতে কাজে লাগাতে হবে। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন, তার আলোকে আইসিটি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আগামী বছরের মধ্যে কয়েক হাজার প্রোগ্রামার তৈরি করা হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রযুক্তির আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নিজ দেশ মেক্সিকোর উদাহরণ দিয়ে উইটসা সভাপতি স্যান্টিয়াগো গুটিয়েরেজ বলেন, ২০০০ সালে মেক্সিকো আউটসোর্সিং খাত থেকে আয় করেছে ৫০ মিলিয়ন ডলার। আর বর্তমানে এ আয় দাঁড়িয়েছে ৬ বিলিয়ন ডলারে। এটি বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সম্ভব। তিনি বলেন, বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এরই মধ্যে অনেকটা এগিয়েছে। আইসিটি ব্যবসা এখানে খুবই গতিশীল। সরকারও এ খাত নিয়ে উৎসাহী। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি জগতে নেতৃস্থানীয় জায়গায় যাবে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইমরান আহমেদ বলেন, সরকার আইসিটি খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। খাতটিতে আরো ভালো করতে হলে তরুণদের কাজে লাগাতে হবে। কারণ ভবিষ্যতে তরুণরাই নেতৃত্ব দেবে দেশকে। আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২১ সালের মধ্যে বিপিও খাত থেকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের বিপিও খাত সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা দেয়া, দেশের তরুণ সমাজের কাছে এ খাতকে কাজের ক্ষেত্র হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া ও দেশের বিপিও খাতকে এগিয়ে নিতে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনে বিভিন্ন সেমিনারে আলোচক থাকছেন দেশী-বিদেশী খাতনামা ব্যক্তিত্ব। এর মধ্যে রয়েছেন— আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্টসের (আইএফএ) সিইও ফায়েজুল চৌধুরী, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহ্মাদ, অস্ট্রেলিয়ান বিপিও অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্টিন এন কনবয়, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশনের (অ্যাসোসিও) সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ এইচ কাফী, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ইনফোসিসের এমডি ও সিইও ড. বিশাল সিক্কা, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার, বেসিস সভাপতি শামীম আহসান, মাইক্রোসফটের বাংলাদেশ কার্যালয়ের এমডি এবং টাই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সোনিয়া বশির কবির, উইটসা সভাপতি স্যান্টিয়াগো গুটিয়েরেজ, ডাটাবেজ মার্কেটিং ও কাস্টমার রিলেশন ম্যানেজমেন্ট সলিউশন বিশেষজ্ঞ রাজমোহন ভি, বিনোদ হ্যামপাপুর র্যাঙ্গাদোর, শ্রী দয়া খালসা। দুদিনের এ সম্মেলনে ১৫টি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল অনুষ্ঠিত হয় ছয়টি সেমিনার। আজ হবে আরো নয়টি সেমিনার। সম্মেলনের সহযোগী হিসেবে আছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি) ও এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি)। আয়োজনে গোল্ড স্পন্সর হিসেবে আছে এডিএন গ্রুপ, জিনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড। সিলভার স্পন্সর সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেড, সিসকো সিস্টেমস, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, টেলিটক, এয়ারটেল এবং আইটি পার্টনার আমরা কোম্পানিজ ও নেটওয়ার্ক পার্টনার ফাইবার অ্যাট হোম।

Source