খবরের শিরোনামঃ তরঙ্গের নিলাম মূল্য পরিবর্তন

খবরের তারিখঃ ২০১৫-১০-০৫

-নিজস্ব প্রতিবেদক
টুজি ও থ্রিজি তরঙ্গের নিলাম মূল্য পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। ব্যাখ্যার জবাব দিতে বিটিআরসি একটি কমিটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। তরঙ্গ নিলামের জন্য যে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে, তাতে টুজি ও থ্রিজির প্রতি মেগাহার্টজ তরঙ্গের ভিত্তি মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে ২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। প্রথম পর্যায়ে প্রতি মেগাহার্টজ টুজি তরঙ্গের ভিত্তি মূল্য ছিল ৩ কোটি ডলার আর থ্রিজি তরঙ্গের ভিত্তি মূল্য ছিল ২ কোটি ২০ লাখ ডলার। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিলে ১ হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে টুজি ও ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে থ্রিজির তরঙ্গ বিক্রির জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল বিটিআরসি। নিলামে অংশ নিতে প্রথমে মোবাইল অপারেটরদের অনাগ্রহ এবং পরবর্তী সময়ে নিলাম নীতিমালা সংশোধন করতে গিয়ে সরকারের অনুমোদন পেতে দেরি হওয়ায় এখন পর্যন্ত সেই নিলামই হয়নি। গত ৩০ এপ্রিলের পর আরও দুবার তারিখ পিছিয়েও মোবাইল অপারেটররা নিলামে অংশ নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করলে নিলাম প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। এরপর নিলাম প্রক্রিয়া সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যেখানে মোবাইল অপারেটরদের পাশাপাশি বেসরকারি ল্যান্ডফোন ও ওয়াইম্যাক্স অপারেটরদের অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়। সংশোধিত এ নীতিমালা অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থ্রিজি তরঙ্গের ভিত্তি মূল্য ২ কোটি ২০ লাখ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৩ কোটি ডলার নির্ধারণের পরামর্শ দেয়। মূল্যবৃদ্ধির এ প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বিটিআরসি তখন থ্রিজি ও টুজি দুই ধরনের তরঙ্গের ভিত্তি মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়। তরঙ্গ মূল্য পুনর্নির্ধারণের যুক্তি হিসেবে বিটিআরসি বলে, উচ্চমূল্যের কারণে মোবাইল অপারেটররা যেখানে নিলামে অংশ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না, সেখানে আরও দাম বাড়ানো হলে তা যুক্তিযুক্ত হবে না। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, তরঙ্গ মূল্য নির্ধারণের পুরো বিষয়টি নির্ধারণ করে বিটিআরসি। যেহেতু এর সঙ্গে সরকারের আয়ের দিকটি সম্পর্কিত, তাই যেকোনো ধরনের মূল্য পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে অনুমোদন নিতে হয়। সে জন্যই তরঙ্গ মূল্য পরিবর্তনের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। এর আগে মোবাইল অপারেটরদের পাশাপাশি অন্যান্য অপারেটরদের অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখার কারণ সম্পর্কেও বিটিআরসির কাছে ব্যাখ্যা চায় মন্ত্রণালয়। জিএসএম বা টুজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে অপারেটররা ১ হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ ও তৃতীয় প্রজন্মের থ্রিজি নেটওয়ার্কের জন্য ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ ব্যবহার করে। নিলাম নীতিমালা অনুযায়ী ১ হাজার ৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে দুটি ব্লকে ১০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ ও ২ হাজার ১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে তিনটি ব্লকে ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রির প্রস্তাব করা হয়েছে। তরঙ্গ নিলামে অংশ নিতে সিম প্রতিস্থাপন কর-সংক্রান্ত ঝামেলা নিরসনসহ আরও কয়েকটি দাবি জানিয়ে আসছে মোবাইল অপারেটররা। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে রবি আজিয়াটা ও এয়ারটেল বাংলাদেশ একীভূত হওয়ার উদ্যোগ সফল হলে তাদের থ্রিজি ও টুজি তরঙ্গের চাহিদার অনেকটাই পূরণ হয়ে যাবে। এতে অপারেটর দুটি প্রস্তাবিত এ নিলামে অংশ নেওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। শেষ পর্যন্ত কবে নিলাম হবে তা-ও এখনো নিশ্চিত নয়।

Source