News Title : গোঁজামিল দিয়ে অবৈধ ব্যান্ডউইথ ব্যবসায় আমরা টেকনোলজিস

News Date : 2015-10-06

-স্টাফ রিপোর্টার
বাংলাদশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) 'গোঁজামিল' দিয়ে অবৈধ ব্যন্ডউইথ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড। বিটিআরসির চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন ৮ জিবি ব্যান্ডউইথ বিক্রি করছে এ প্রতিষ্ঠান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ৮ জিবি দিয়ে দিনে গড়ে এক কোটি ফোন কল করা যায়। ফলে একদিকে যেমন চলছে 'লুকোচুরি' অন্যদিকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। পাশাপাশি মাসিক প্রতিবেদন জমা দিতেও গড়িমসি করছে প্রতিষ্ঠানটি। একাধিকবার এ নিয়ে বিটিআরসি ব্যাখ্যা চেয়েও কোনো সদুত্তর পায়নি। সবশেষ গত ৮ আগস্টও ব্যাখ্যা চেয়ে বিটিআরসি থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং ও অপারেশন বিভাগ থেকে আমরা টেকলোজিসকে সে চিঠি দেয়া হয়। প্রথম চিঠিটি দেয়া হয় ৭ জুলাই। আমরা টেকনোলজিসের পক্ষ থেকে তখন যে উত্তর দেয়া হয়, সেটি বিটিআরসির কাছে 'সন্তোষজনক' মনে হয়নি। ফলে একমাস পরে ১৮ আগস্ট সিনিয়র সহকারি পরিচালক নাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত আরও একটি চিঠি পাঠানো হয়। সেখানে আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।চিঠিতে বলা হয়, যাচাই বাছাই করে দেখা গেছে আমরা টেকনোলজিস থেকে ব্যান্ডউইথ ক্যাপাসিটির একটি বড় অংশ প্রসঙ্গে কমিশনকে অবহিত করা হয়নি। যার পরিমাণ প্রায় আট জিবি। এ বিষয়ে কমিশন আমরা'র কাছে জানতে চেয়েছে- কেন এ তথ্যটি কমিশনকে অবহিত করা হয়নি এবং এতো পরিমাণ ব্যান্ডউইথ দিয়ে কী করা হয়েছে?নিয়ম অনুযায়ী কতো জিবি ব্যান্ডউইথ ব্যাবহার করা হচ্ছে, সে বিষয়ে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। কিন্তু আমরা টেকনোলজি দীর্ঘদিন যাবত আট জিবি ব্যান্ডউইথের তথ্য কমিশনের কাছে গোপন রেখেছে। এই আট জিবি দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ১ কোটি মিনিট কল করা যায় বলে সংশ্লিষ্টরা বলেন। এ কাজটি সম্পূর্ন অবৈধ বলেও জানান তারা। এদিকে মাল্টি রাউটার ট্রাফিক গ্রাফার (এমআরটিজি) বিষয়েও ভুল ও অসত্য তথ্য কমিশনকে দিয়েছে আমরা। ক্লায়েন্ট তথ্য ও মনিটরিং টার্মিনাল হতে এমআরটিজির প্রাপ্ত তথ্যের মধ্যে অসঙ্গতি রয়েছে। দুই তথ্যে ক্লায়েন্ট সংখ্যা, তালিকা ও ব্যান্ডউইথ ব্যাবহারে অসামঞ্জতা রয়েছে বলে কমিশন ব্যাখ্যা চেয়েছে। তথ্যের এ গরমিল প্রসঙ্গে কমিশন জানতে চেয়েছে আমরা টেকনোলজিসের কাছে। এ ছাড়াও প্রতিমাসের ৭ তারিখের মধ্যে বিটিআরসিকে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও বরাবরই সেটা ঠিকমতো দিচ্ছে না আমরা। ই-মেইলেই একটি প্রতিবেদন দিয়ে দায় সারছে প্রতিষ্ঠানটি। হার্ডকপি দেয়ার নিয়ম থাকলেও সেটা অমান্য করে চলছে। এ বিষয়ে কমিশন জানতে চেয়েছে কেন নিয়মিত প্রতিবেদনের সফট ও হার্ডকপি সময়মতো জমা দেয়া হয় না। শুধু তাই নয়, যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রেও আমরা টেকনোলজিসের দেয়া ব্যাখ্যা যথাযথ মনে হয়নি কমিশনের কাছে। এক্ষেত্রে একটি পূর্ণাঙ্গ কস্ন্যারিফিকেশন প্রয়োজন। কেননা এতোগুলো স্থাপনায় হঠাৎ কেন ব্যান্ডউইথ বেড়ে গেছে এবং বর্তমানে এসব স্থাপনা থেকে কত পরিমাণ ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হচ্ছে, সে বিষয়েও বিস্তারিত জানতে চেয়েছে কমিশন।এসব বিষয়ে গত ২৫ আগস্টের মধ্যে আমরার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সশরীরে উপস্থিত থেকে পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। তবে এ সব বিষয়ে আমরা টেকনোলজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অন্যান্য দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলতে চাইলেও তারা মুখ খোলেননি।

Source