-স্টাফ রিপোর্টার
মোবাইল নম্বর অপরিবর্তিত রেখে অপারেটর পরিবর্তন করতে পারবেন গ্রাহকরা। আগামী বছরের মার্চের মধ্যেই নতুন এ সেবা চালু করা হবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) নামের ওই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছে। গত ২০শে সেপ্টেম্বর এমএনপি নীতিমালার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ফোন নম্বর অপরিবর্তিত রেখে মুঠোফোন অপারেটর পরিবর্তন করার সুবিধাকে বলা হয় এমএনপি। একজন গ্রাহক নম্বর অপরিবর্তিত রেখেই নিজেদের ইচ্ছেমতো এক অপারেটর থেকে আরেক অপারেটরে যেতে পারেন এ ব্যবস্থায়। বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে এ ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ২০১২ সালে বাংলাদেশে এমএনপি বাস্তবায়নের প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয়। গতকাল সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী। প্রতিমন্ত্রী বলেন, মার্চের আগেও এমএনপি সেবা চালু হতে পারে। সর্বোচ্চ ৩০ টাকায় অপারেটর পরিবর্তন করে ৪০ দিন পরিবর্তিত অপারেটরের সেবা গ্রহণ করা যাবে। এ সময়ের মধ্যে অন্য অপারেটর পরিবর্তন করা যাবে না। তারানা হালিম বলেন, একজন গ্রাহক হলেও তার অভিযোগ গুরুত্বপূর্ণ। কলড্রপসহ অন্যান্য সমস্যা হলে গ্রাহক অন্য অপারেটরে চলে যাবেন। গ্রাহক ধরে রাখতে তাই অপারেটররা প্রতিযোগিতা শুরু করবেন, তাদের সেবা উন্নত হবে। গ্রাহকরাও তাদের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন। তিনি বলেন, নম্বর বদল না করে গ্রাহকদের অন্য অপারেটরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে ২০১৩ সালের জুন মাসে মোবাইল ফোন অপারেটরদের নির্দেশ দেয়া ছিল। অপারেটরদের টু-জি লাইসেন্স নবায়নের সময় গাইডলাইনে এমএনপি চালুর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত নীতিমালা অনুমোদনের পর তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, অনুমোদন পেলে নিলামের মাধ্যমে ১৫ বছরের জন্য একটি কোম্পানিকে লাইসেন্স দিতে দরপত্র আহ্বান করা হবে। নিবন্ধিত যোগ্য কোম্পানি, বাংলাদেশি বা প্রবাসী বাংলাদেশী মালিকানাধীন কোম্পানি নিলামে অংশ নিতে পারবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদেশী কোম্পানির ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশী অংশীদার লাগবে। এক্ষেত্রে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ মালিকানা ৫১ শতাংশ হতে পারে। নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বাংলাদেশে লাইসেন্সধারী মোবাইল অপারেটরের মালিক, পরিচালক, অংশীদার, বিনিয়োগকারী, শেয়ার হোল্ডার কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। লাইসেন্স গ্রহণের ক্ষেত্রে একাধিক দেশে ন্যূনতম তিন বছর এমএনপি সেবা প্রদানে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, বার্ষিক লাইসেন্স ফি হবে ২০ লাখ টাকা ও লাইসেন্স ইস্যুর পর দ্বিতীয় বছর হতে এমএনপি অপারেটর সরকারকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে রাজস্ব দেবে। সুষ্ঠুভাবে এমএনপি সেবা চালু করার জন্য সরকারের সব প্রচেষ্টাই অব্যাহত থাকবে।
একটিও অনিবন্ধিত সিম থাকবে না
সাংবাদিকেদের প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বাজারে একটিও অনিবন্ধিত সিম থাকবে না
তিনি বলেন, মোবাইল সিমকার্ড পুনঃনিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় আগামী ১লা নভেম্বর থেকে পরীক্ষামূলক ও ১৬ই ডিসেম্বর থেকে জাতীয়ভাবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ শুরুর কথা রয়েছে। সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনির্ধারিত সময় ধরে চলতে পারে না জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, আগে অভিযোগ ছিল অপারেটররা এনআইডি সুবিধা পায় না। এখন এনআইডি সুবিধা তৈরি হয়েছে। অপারেটরদের সঙ্গে এনআইডি’র সমঝোতার জন্য এখন পর্যন্ত সব প্রস্তুতি রয়েছে। তারা এখন পরীক্ষামূলক সুযোগ পাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা অনিয়মকে সম্মান করবো না, একদিনের জন্যও না। মার্চ-এপ্রিলের পর অভিযান চলবে। মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পর ৯০ দিনের টার্গেট ধরে কাজ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, পারফরমেন্স ভাল না হলে কর্মকর্তাদের মধ্যে পরিবর্তন আনা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের কোন বিভাগের ব্যর্থতা মানে তারা কাজ করেননি। তাই কেউ বদলি হবেন আবার কেউ পরিবর্তন হবেন। মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি আনতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
Source